sliderস্থানীয়

সিংগাইরে বিল্ডিং রক্ষায় শতবর্ষী গাছ কর্তন, সংখ্যালঘুদের ক্ষোভ

সিরাজুল ইসলাম,সিংগাইর(মানিকগঞ্জ): হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা-পার্বন ও পৌষ সংক্রান্তি মেলার কেন্দ্রস্থল মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ বাবুর বাড়ির পুকুর সংলগ্ন শতবর্ষী পাকর গাছটির ওপর চলছে খড়গ। সরকারি রাস্তার জায়গায় এ গাছটি কর্তন নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। দু’দিন ধরে করাত-কুড়ালের আঘাতে বিনাশ হতে চলছে সনাতন ধর্মের উপাসনালয়ের গাছটি।

সরেজমিন বুধবার(১৫ মার্চ) দেখা যায়,পুরনো ওই পাকর গাছটির বড় আকারের ডাল পালাগুলো কাটার কর্মযজ্ঞ চলছে। গাছ কাটার কাজে নিয়োজিত দু’শ্রমিক ছকেল উদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন জানান, গাছটি আজাহার বেপারি সরকারিভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করেছেন। আমরা তার হয়ে কাজ করেছি।

এদিকে, সনাতন ধর্মাবলম্বী অনিমেষ দাস খোকন, পরেশ চন্দ্র দাস, বাসুদেব মন্ডল, সুনীল ঘোষ, ইন্দ্রজিৎ সাহা, বাবুল দাস ও রতনশীলসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, এ পাকর গাছটি আমাদের ঐতিহ্য। শত বছরের পুরনো সরকারি খাস জায়গার এ গাছটিকে কেন্দ্র করে পৌষ মেলা মিলতো, পূজা হতো। ইতিপূর্বে একাধিকবার এ গাছটি কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, বাধা দিয়ে থামানো হয়েছে। এবার আর শেষ রক্ষা হলো না। তারা আরো বলেন,আবুল মেম্বারের ব্যক্তিস্বার্থে তার বিল্ডিং এর সুবিধার জন্য গাছটি কেটে ফেলা হচ্ছে। এটা সম্পূর্ন বে-আইনি।

উপজেলা বনায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জয়মন্টপ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার হাজী মো.আবুল হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে রেজুলেশন করে গাছটির ডাল টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে।
জয়মন্টপ ইউনিয়নের ওয়ার্ডের মেম্বার হাজী মো.আবুল হোসেন গাছটি তার নিজের জায়গায় দাবী করে বলেন, ডিসি ও ইউএনও সাহেব কাটছেন। এতে আমার কোন আপত্তি নেই। তার নিজের জায়গার পরিমান সম্পর্কে জানতে চাইলে রাগান্বিত হয়ে তিনি সংযোগ কেটে দেন।

জয়মন্টপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শাহাদৎ হোসেন বলেন,বিল্ডিং নষ্ট হওয়ার কারনে ৩-৪ বছর আগে অনুমতি এনে ওই গাছের একটা ডাল কর্তন করায় হিন্দু সম্প্রদায় বাধা দিয়েছিলো। তারপর আমার সাথে আর কোন কথা হয়নি। চলমান গাছ কাটা সম্পর্কে চেয়াম্যান কিছুই জানেননা বলেও জানান।
উপজেলা ফরেষ্টার মো.ইউসুফ আলী বলেন, সরকারি নিয়মনীতি মেনে টেন্ডারের মাধ্যমে ওই গাছের ২টি ডাল ওয়ার্ড মেম্বার হাজী মো.আবুল হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিক্রি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, যেহেতু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আবেগের বিষয় জড়িত, আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button