সিরাজুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা বশির উদ্দিন ফাউন্ডেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ সেই প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফুর রহমানকে অবশেষে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব গোলাম মোস্তফা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরো জানান, আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির সত্যতা পাওয়ায় গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়।
জানা গেছে, ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আরিফুর রহমান ইতিপুর্বে ৩৫ লাখ টাাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে ৩ শিক্ষক ও ২ কর্মচারি নিয়োগ দেন । এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনের নজরে আসে। প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে স্থানীয় দ’ু সংবাদ কর্মীকে হুমকি দেন প্রধান শিক্ষক ও তার দুই ছেলে। হুমকির ঘটনায় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সিংগাইর থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়।
পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে স্কুল ঘর বিক্রির ৩ লাখ ৯৫ হাজার ও সুদসহ এফডিআর’র ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনা প্রকাশ পায়। এছাড়া স্কুলের ল্যাপটপ, প্রিন্টার, প্রজেক্টর, পানি বিশুদ্ধকরণ কিটস ও আইপিএসসহ বিভিন্ন মালামাল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার ও আত্মসাত করেন তিনি। এ নিয়ে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই প্রধান শিক্ষক আরিফুৃর রহমানকে গত ১২ ও ২২ জুলাই পৃথক দুটি কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়। ওই নোটিশের কোনো প্রকার জবার না দেয়ায় গত মঙ্গলবার কমিটির জরুরী সভায় তাকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করা হয়। সেই সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়।
উত্তর জামশা বশির উদ্দিন ফাউন্ডেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, আমি কোনো অনিয়ম- দুর্নীতির সাথে জড়িত না এবং আমাকে বরখাস্তের কোনো চিঠিও পাইনি। স্কুল অনেক টাকা ঋণ আছে। আমি স্কুলের কাছে ঋণের টাকা পাব।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম আঃ হান্নান বলেন, বহিস্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এখনো অফিসিয়ালি চিঠি হাতে পাইনি। এখন থেকে দাপ্তরিক সকল কার্যক্রম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমেই হবে।
উল্লেখ্য, নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির কারণে ২০১৫ সালের ১ জুলাই প্রধান শিক্ষক আরিফুর রহমানের এমপিও স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তিনি শিক্ষক-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতিসহ একাধিক মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন।