sliderস্থানীয়

সিংগাইরে খাল দখল করে চলছে মাদ্রাসা ভবন নির্মাণের কাজ

মানছেন না প্রশাসনের বাঁধা

সিরাজুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ): মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার দক্ষিণ বলধারা এলাকায় খাল দখল করে চলছে উম্মে হাবিবা (রাঃ)আদর্শ বালিকা মাদ্রাসা ও এতিমখানার ভবন নির্মাণের কাজ। পরিমাপ করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার বাঁধা দেয়া হলেও তা মানছেন না মাদ্রাসা কমিটির লোকজন। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে এমন কর্মকান্ডে ক্ষোভ বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।

সরেজমিন শনিবার জানা যায়, মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তোতা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও স্থানীয়
ইউপি মেম্বার আক্কাস আলীর নেতৃত্বে চলছে খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ। এতে মাদ্রাসার পাশ দিয়ে জনগনের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটিও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, দক্ষিণ বলধারা সরকারি রাস্তা ঘেষে কালিগঙ্গা নদীর শাখা নূরালীগঙ্গা খালটি প্রবাহিত। খালের পাশেই স্থানীয় বাসিন্দাদের দান-অনুদানে উম্মে হাবিবা (রাঃ) আদর্শ বালিকা মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠিত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। মাদ্রাসা কমিটির কতিপয় সদস্যের যোগ সাজশে গত ৫-৬ মাস আগে মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে খাল দখল করে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। এরপর সেখানে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করলে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে বাঁধা দেয়া হয়।
পরবর্তীতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের পক্ষ থেকে পরিমাপ করে ওই জায়গায় লাল নিশান টাঙানো হয়। তারপরও প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে এগিয়ে চলছে নির্মাণ কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খালের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাণ হলে একদিকে চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যদিকে দৃশ্যমান খালটি সংকুচিত হয়ে বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবাহে দক্ষিণ পাশের সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়টি ভাঙনের কবলে পরবে। তাছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটির জন্য ভবন করার নিজস্ব জায়গা থাকলেও খাল দখল করে বিতর্ক সৃষ্টির মতো কাজ নাকরাটাই উত্তম। এলাকাবাসি বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
মাদরাসার অদূরে খাল সংলগ্ন উত্তর গোলাইডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং সভাপতি আবুল কালাম আজদ বলেন, খালের জায়গায় ভবন নির্মাণ বর্ষাকালে পানি প্রবাহের গতি পথ পরিবর্তন হয়ে স্কুল ভবন ভাঙ্গনের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে এলাকার লোকজনের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে । দক্ষিণ বলধারা উম্মে হাবিবা (রাঃ) আদর্শ বালিকা মাদ্রাসা ও এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, এটা খালের জায়গা না আমাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তি। বরং দক্ষিণ পাশের স্কুলটি খালের জায়গায় পড়েছে। পরিবারের সকলে মিলে আমরা মাদ্রাসার নামে দান করেছি। তিনি আরো বলেন,
মাদ্রাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়াকফ করা সকল সম্পত্তির গ্রহিতা নিজেই বলে দাবী করেন তিনি।
বলধারা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, পুনরায় লাল নিশান টাঙিয়ে দিয়ে খালের জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, খালের জায়গা দখল করে মাদ্রাসা ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই। আইন মোতাবেক এ জায়গা বন্দোবস্ত ও দেয়া যায় না। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে এসিল্যান্ডকে পাঠিয়ে পূনরায় পরিমাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button