sliderস্থানীয়

সিংগাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন

সিরাজুল ইসলাম,সিংগাইর (মানিকগঞ্জ): মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। অন্য এলাকা থেকে এ উপজেলায় ঢুকে অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন তারা। শুধু মাত্র গায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তকমা থাকায় এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে নামেমাত্র। ফলে অপরাধ প্রবনতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জানা গেছে, শনিবার (১ জুন) সকালে উপজেলার জামসা এলাকা থেকে ৯৫ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের ঘটনায় র‌্যাব-১ এর ডিএডি শামীমুজ্জামানসহ ৫ জন আটক হন। তার সঙ্গে থাকা র‌্যাব পরিচয়দানকারী বাকী ৪ জন হচ্ছেন- সম্রাট মৃধা(২৮), আমেজ উদ্দিন(৫২), মিরাজুল শেখ(২৮) ও সুমন(১৯)। এদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুমন হাওলাদার বাদী হয়ে থানায় মামলা করলেও র‌্যাব সদস্য শামীমুজ্জামানকে বাদ দিয়ে বাকী ৪ জনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এ বিষয়ে সিংগাইর থানার ওসি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই র‌্যাব সদস্যকে তাদের সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৬ মে সন্ধ্যায় উপজেলার বাঘুলি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অদূরে জনৈক ইসমাইলের বাড়িতে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৫ জন অন্যের পাওনা টাকা তুলে দিতে গেলে এলাকাবাসী তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে রফাদফা শেষে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।

গত ১৫ জানুয়ারি চান্দহর ইউনিয়নের শান্তিপুর বাজারের কম্পিউটার দোকানের সামনে থেকে রাত সাড়ে ৪ টার দিকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঘোরাফেরার সময় সন্দেহ হলে ৫ জনকে আটক করে শান্তিপুর-বাঘুলি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। এদের মধ্যে ডিএমপির মোটরযান শাখায় কর্মরত মোবারক নামের এক সদস্য ছিলেন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে শুধু আরিফুর নামের একজনকে মামলা দিয়ে বাকীদের ছেড়ে দেয়া হয়। থানা পুলিশ অবশ্য এদের কাছ থেকে পুলিশের ভূয়া আইডি কার্ড ও হাতকড়া উদ্ধার করেন।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুলিশ পরিচয়ে উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের বাঘুলি উত্তরপাড়া মসজিদের সামনে থেকে উজ্জল সাহা(৩৬) নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ৯৮ ভরি স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে তাকে ওই দিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টাঙ্গাইল জেলার করোটিয়া এটিএম টেক্সটাইল মিলের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে জেলা গোয়েন্দা শাখা জড়িত এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন।

আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে একের পর এক অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সিংগাইর উপজেলাবাসীর মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের নজরদারী বাড়ানোর পাশাপাশি অপরাধীদের অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে আইনের যথাযথ
প্রয়োগের জোর দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে এএসপি (সিংগাইর সার্কেল) আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, অপরাধীরা বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপরাধ করলেও প্রত্যেকটি ঘটনায়ই আইনের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের সার্বক্ষনিক নজরদারী রয়েছে
বলেও তিনি জানান।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button