সাভারে শিশু গৃহপরিচালিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ, আটক ২

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি: সাভারে পৌর এলাকার রাজাশনে শিশু গৃহপরিচালিকাকে সূচ ও ধারালো চাকু দিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শিশুটিকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার গৃহকর্মী অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে রাজাশন এলাকায় তার বাবা-মায়ের কাছে দিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায় অভিযুক্তরা।
ভুক্তভোগী শিশুর নাম মিম (১০)। মিম ৮ নম্বর ওয়ার্ড রাজাশন এলাকার ভাড়াটিয়া আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্তরা হলেন রাজাশন এলাকার গৃহকর্তা কাজী ইসমাইল (৪৩) ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ মনি (২৬)। পরশ মনি গৃহিণী ও কাজী ইসমাইল পেশায় ডাক্তার বলে জানা গেছে।
বিকেলে অভিযুক্ত গৃহকর্তা কাজী ইসমাইল ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ মনিকে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যপারে শিশুটির মা কুলসুম বেগম সাভার মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
ভুক্তভোগী শিশু মিম বলে, সে ওই বাসায় প্রায় এক বছর ধরে গৃহপরিচালিকার কাজ করে আসছে। ওই বাসায় যাওয়ার পর প্রথম কয়েকদিন তার সাথে ভালো ব্যবহার করেন অভিযুক্তরা। কিছুদিন যাওয়ার পরই তাকে মারধর করতে থাকে। সর্বশেষ তাকে চুরির অপবাদ দিয়ে সূচ ও চাকু দিয়ে সারা শরীর অসংখ্য ক্ষত করে। এছাড়া ব্যাট দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করেছে।
মিম জানান সে নাকি টাকা চুরি করে তার মায়ের কাছে দিয়েছে। এমন অপবাদ দিয়ে তাকে প্রায় প্রতিদিন মারধর করেন অভিযুক্ত দম্পতি। পরে বৃহস্পতিবার তাকে তাদের বাড়িতে দিয়ে আসেন এবং তার বাবাকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলে যায় অভিযুক্ত দম্পতি।
শনিবার দুপুরে কিছু লোক বাসায় গিয়ে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তির করেন। শিশুটির মা কুলসুম বেগম জানান, তার মেয়ে কে ঠিকমতো বেতনও দেয়া হতো না।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ভুক্তভোগীর সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সে হাসপাতালে ভর্তি থাকবে।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়েছি। ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি নির্যাতনের শিকার শিশুটির সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা শিশুটির অভিভাবকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তারা অভিযোগ দিলেই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।