সাভারে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ করায় হাতুড়িপেটা, শ্রমিকদের বিক্ষোভ
এর আগে কারখানার নিরাপত্তা কর্মীরা তাদেরকে হাতুড়িপেটা করে বের করে দেয় বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা।
ছাঁটাই বন্ধ এবং ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদেরকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা কারখানার সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
খবর পেয়ে শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
শিল্প পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, এলাইন অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করে।
সম্প্রতি এসব শ্রমিকদেরকে দফায় দফায় ছাঁটাই করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে যাদের চাকরির বয়স দুই থেকে তিন মাস এমন দুই শতাধিক শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) কমপক্ষে ৪০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাই শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করে শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে শনিবার সকালে সকল শ্রমিক একযোগে কারখানার সামনের সড়ক তিন ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষুব্ধ নারী শ্রমিক শারমিন আক্তার বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে কোনো রকম কারণ ছাড়াই জোরপূর্বক ছাঁটাই করছে। আমাদের জীবন এখন অনিশ্চয়তায়। দাবি আদায়ে আন্দোলন করতে বাধ্য করে আমাদের করোনাভাইরাসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত না হইয়াও আমাদের মাঝে এর যে প্রভাব পড়েছে তা মৃত্যুর চেয়ে বেশি যন্ত্রনাদায়ক। আমাদের দাবি একটাই হয় কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে কাজে পুনর্বহাল করুক না হয় শ্রম আইন অনুযায়ী আমাদের তিন মাস ১৩ দিনের বেতনসহ যাবতীয় পাওয়ানা পরিশোধ করে দিক।
অপর শ্রমিক সুরাইয়া আক্তার বলেন, কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন আহমেদ জোরপূর্বক আমাদের কাছ থেকে অব্যাহতিপত্রে স্বাক্ষর রেখে বের করে দিয়েছে এবং তিন হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়ে নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেন।
আজকে আমাদের তিন’শ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। কিন্তু আমরা কারখানা থেকে বের হতে না চাইলে নিরাপত্তা কর্মীরা আমাদেরকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এখন আমাদের চাকরি না থাকলে তো বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
ছাঁটাই ও ঘুষ নিয়ে চাকরি দেয়ার বিষয়ে জানতে কারখানাটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা লিটন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর সিনিয়র এএসপি আউয়াল হোসেন বলেন, কিছু শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রতিবাদে তারা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদেরকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে বলি। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুরোধ মেনে নিলে সকল শ্রমিক কারখানায় শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগদান করেন।
এছাড়া যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানাটির সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি। দেশ রূপান্তর