sliderস্থানীয়

সাবেক পৌর মেয়রের কান্ড ! সিংগাইরে সরকারি রাস্তার মাটি কেটে কাঁটাতারের বেড়া

সিরাজুল ইসলাম, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) : মানিকগঞ্জের সিংগাইর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয় তার নিজ বাড়ির সামনে সরকারি রাস্তা কেটে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন। শুধু রাস্তা কেটেই থেমে নেই তিনি। পাশর্^বর্তী পরিবারটি যাতে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না পারে সে জন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়েও আটকে দিয়েছেন।

পৌর এলাকার ঘোনাপাড়া মহল্লার (৮নং ওয়ার্ড) সাবেক মেয়রের বাড়ির সামনেই দৃশ্যমান ঘটনাটিতে বর্তমান মেয়র আবু নাঈম মো.বাশার নিন্দা জানিয়েছেন। পাশাপাশি এলাকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপির এ প্রভাবশালী নেতা ও দু’বারের নির্বাচিত পৌর মেয়র খোরশেদ আলম ভূইয়া জয়। প্রতিবেশী ভূক্তভোগী মো.সিরাজুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা ও বর্তমান মেয়রের কার্যালয়ে ধর্ণা দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন।

সিংগাইর পৌর এলাকার বিনোদপুর মহল্লার মৃত তাঁরা মিয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, সিংগাইর মৌজার ২নং সীটে আরএস ১৪৮৯নং দাগের ২০ শতাংশ জমি ক্রয় করে টিনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেই। পরবর্তীতে পৌরসভা থেকে প্ল্যান অনুমোদন নিয়ে বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করলে সাবেক মেয়র বাঁধ সাধে। তিনি এবং তার ছোট ভাই গত ২৮ জানুয়ারি শতাধিক লোকজন নিয়ে ভেকু দিয়ে আমার বাড়ির সামনে সরকারি রাস্তা কেটে ফেলে। ভেঙ্গে ফেলে আমার নির্মিত বাউন্ডারি দেয়াল। সেই সাথে বসতবাড়িতে প্রবেশের সরকারি রাস্তা কেটে আটকে দেয়া হয় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ।

সরেজমিন সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারি রাস্তার দক্ষিণ পাশে সাবেক মেয়রের বাড়ি। উত্তর পাশে সিরাজুলের ক্রয়কৃত জায়গা। একজন সাবেক জনপ্রতিনিধি ও আইনজ্ঞ সরকারি রাস্তা কেটে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কান্ড জ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

ভূক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, শুধু রাস্তা বন্ধ করে দিয়েই থেমে যাননি তিনি। কেটে দেয়া হয়েছে আমার বসতবাড়ির বিদ্যুতের লাইনটিও। মেয়র জয় এর দাপটে আমি কোথাও গিয়ে প্রতিকার পাচ্ছি না। প্রশাসনের লোকজন ও উল্টো আমাকেই শাসায়। তিনি আওয়ামী পরিবারের সদস্য হলেও সরকার দলীয় লোকজন মেয়র জয়কে শেল্টার দেয়ায় ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও জানান।

অভিযুক্ত সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয় বলেন, সরকারি রাস্তার উত্তর পাশে আমার ১৮৮৭নং দাগে ১০ শতাংশ জমি রয়েছে। আমার জায়গাতেই আমি মাটি কেটে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছি।

সিংগাইর পৌরসভার মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার বলেন, প্রত্যেক নাগরিকের সরকারি রাস্তা দিয়ে চলাচলের অধিকার রয়েছে। সাবেক মেয়রের এমন কর্মকান্ডের নিন্দা জানাই।

মানিকগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিংগাইর জোনাল অফিসের ডিজিএম সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মিটার উল্টে ছিল এমন সংবাদের ভিত্তিতে মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরবর্তীতে সাবেক মেয়রের অভিযোগের ভিত্তিতে সংযোগ দেয়া হয়নি। স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তির কথা বলা হয়েছে।

সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ের বিরোধ দেখা পুলিশের কাজ নয়। ফৌজদারি ঘটনা ঘটলে থানা পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। সরকারি স্বার্থে পুলিশি সহযোগিতা চাইলে দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, রাস্তার ঢাল কেটে ও কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে সাবেক মেয়র সাহেব যে কাজটি করেছেন সেটা অবশ্যই দৃষ্টিকুটর। আমি তাকে বেড়া সরিয়ে দিতে বলেছি।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button