সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে তাদের ব্যক্তিগত আশা-আকাঙ্ক্ষা, লড়াই ও দাবি-দাওয়া লিখে তার অফিসকে জানাতে বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যা খুশি তাই লিখবেন, দ্বিধা করবেন না। আমরা আপনাদের দাবি পূরণের চেষ্টা করব। এখন যদি কোনো সমস্যার সমাধান করা যায়, আমরা তা এখনই করব।’
সাফ বিজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্যরা শনিবার (২ নভেম্বর) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ড. ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎকালে তার সাথে তাদের স্বপ্ন ও প্রতিদিনের সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন।
গত ৩০ অক্টোবর কাঠমান্ডুতে সপ্তম সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের পরে বিজয়ী খেলোয়াড়দের দাবিগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান উপদেষ্টা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে খেলোয়াড়দের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সাফল্য অর্জনের জন্য আমি পুরো জাতির পক্ষ থেকে আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। জাতি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সফলতা চায়। আপনারা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছেন।’
ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন তাদের আপ্যায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সংবর্ধনায় যোগ দিতে পেরে তারা সম্মানিত বোধ করছেন।
তিনি বলেন, ‘অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। শুধু নারী ফুটবল দলই নয়, বাংলাদেশের মেয়েদের অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হয়।’
২০০৯ সালে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করা সাবিনা ফুটবলকে প্যাশন হিসেবে নেয়ার সাহস দেখানোর জন্য তার আগের প্রজন্মের অবদানের কথাও স্মরণ করেন।
সাবিনা বলেছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই দুর্বল পরিবার থেকে এসেছেন এবং তাদের পরিবারকে সহযোগিতা করা দরকার। সাবিনা বলেন, ‘আমরা যে বেতন পাই, তা দিয়ে তেমন সমর্থন দেয়া যায় না।’
মারিয়া মান্ডার মতো সতীর্থদের লড়াইয়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন এই স্ট্রাইকার।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, সুপ্রদীপ চাকমা, বিধান চন্দ্র রায়, নূরজাহান বেগম প্রমুখ।
সূত্র : ইউএনবি
নারী ফুটবলারদের সমস্যার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে: ক্রীড়া উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে সংবর্ধনা পেয়েছেন সাফজয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। শনিবার (২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নারী ফুটবলারদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলকে প্রধান উপদেষ্টার সংবর্ধনা শেষে আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা খুব ধৈর্য সহকারে নারী ফুটবলারদের কথা শুনেছেন। বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছেন এবং সেগুলো লিখিতভাবে দেওয়ার জন্য বলেছেন। সেগুলো আমরা লিখিত পেলে খুব দ্রুত ব্যবস্থা যাতে নিতে পারি। নারী ফুটবলারদের সমস্যার বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
নারী ফুটবলারদের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নেবেন বলে জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, আবাসন সমস্যা, অনুশীলন, বেতন কাঠামোসহ সব কিছু নিয়ে কথা হয়েছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে ওনারা (ফুটবলার) আমাদেরকে তাদের সমস্যাগুলো লিখিতভাবে দেবেন। সেটা আমি সরাসরি স্যারকে পৌঁছে দেবো।
আসিফ মাহমুদ বলেন, নারী ফুটবলাররা জানিয়েছেন যে, ক্যাম্পটা সারা বছর চলার কারণে এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। সেটাকে যেন সারা বছর চলমান রাখা যায়, সে আবদার তারা করেছেন। বাফুফের নতুন কমিটির সঙ্গে মিলে নারী ফুটবল দলের সমস্যা এবং ফুটবলের যে সমস্যা সবগুলো আমরা সমাধান করবো।
নারী ফুটবলারদের বেতন না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি যে দুই মাসের স্যালারি ডিউ আছে। আপনারা জানেন এতদিন বাফুফে সালাউদ্দিন সাহেবের কমিটি ছিল। এখন নতুন কমিটি এসেছে, নতুন কমিটির সঙ্গে আমরা এই কথাগুলো ওয়ার্ক আউট করবো। ভবিষ্যতেও যেন ডিউ না হয়। বাফুফের বিশাল অঙ্কের ঋণ রয়েছে, কেন হলো এরকম? কোন কোন জায়গায় আর্থিক অনিয়ম হয়েছে আপনারাই (মিডিয়া) বিভিন্ন সময়ে বলেছেন। সেগুলো নিয়ে অলরেডি নতুন কমিটিকে অডিট করার জন্য বলেছি। যদি কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।