শিবালয় প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী ইউপির চর তিল্লী বাজার। সকাল বেলা থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম এই বাজারটি। বছরের ছয় থেকে সাত মাস শুধু বেগুন বিক্রি হয় এখানে। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার মণ বেগুন বিক্রি হয়, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায়।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, মানিকগঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেগুন উৎপাদন হয় সাটুরিয়ায়। গত বছর সাটুরিয়ায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হলেও এ মৌসুমে তা বেড়ে হয়েছে ৪৪৯ হেক্টর। এ বছর সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ‘পার্পল কিং’ জাতের বেগুন।
চর তিল্লী বাজারে প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার মণ বেগুন বিক্রি হয়। সকাল থেকেই কৃষকরা বেগুন ঝাকায় করে নিয়ে আসেন। পাইকাররা দাম-দর করে সেগুলো কিনে নেন। বাছাই করে এক মণের প্যাকেট বানিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এসব বেগুন রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর, যাত্রাবাড়ি, কুমিল্লা, গাউসিয়া ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন বাজারে যায়।
চর তিল্লী গ্রামের কৃষক আলমাস হোসেন জানান, তিনি ১৫ বছর ধরে বেগুন চাষ করছেন। এ বছর ফলন ভালো সেই সাথে বাজার দরও ভালো। তবে, প্রতিনিয়ত দাম ওঠানামা করায় চিন্তিত তিনি।গোপালপুর গ্রামের কৃষক সোলায়মান মিয়া জানান, দেড় বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করে এরইমধ্যে লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। আজ ২০ মণ বেগুন নিয়ে আসছিলাম বাজারে প্রতিমণ ৮৭০ টাকা করে বিক্রি করেছি। আগের সপ্তাহে সাড়ে নয়শ টাকা পেয়েছিলাম। পাইকার মালেক মিয়া বলেন, প্রতিদিন বাজারে ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকার বেগুন কেনাবেচা হয়। আর এসব বেগুন দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায় প্রতিদিন। আমাদের এলাকার বেগুন মানে বেশ ভালো তাই চাহিদাও বেশ।
চর তিল্লী বাজারের পাইকার ইংরেজ ব্যাপারি বলেন, ‘আমাদের তিল্লী ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকই এ মৌসুমে বেগুনের আবাদ করে থাকে। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আবাদ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি প্রতিদিন এই বাজার থেকে ৬০০ মণ বেগুন কিনি। আমার মত আরো ৬-৭ জন পাইকার আছে।
তিল্লী ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম ধলা বলেন, আগে আমাদের কৃষকরা তাদের সবজিগুলো মানিকগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে নিয়ে যেতেন। এতে তাদের পরিশ্রম ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যেতে। আমরা স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে চর তিল্লী বাজারে একটি আড়ত করি। এতে করে কৃষক আর পাইকারদের সুবিধা হয়েছে।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাটুরিয়ায় এ মৌসুমে শুধু বেগুন উৎপাদন হয়েছে ৪৪৯ হেক্টর জমিতে যা গত বছরের চেয়ে ১০১ হেক্টর বেশি। আর কৃষকরা এ মৌসুমের শুরু থেকেই বেগুনের দামও ভালো পাচ্ছেন। আমরা সব সময় কৃষকদের নানা রকম পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছি।