sliderস্থানীয়

সাটুরিয়ার তাঁতপল্লির সংগ্রামী মানুষের গল্প

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ধরে যাওয়ার সময় হঠাৎ কানে আসে ঠুনঠুন শব্দ। উৎস খুঁজতে একটি বাড়িতে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে আল্লাদী বেগমের সঙ্গে। বয়স ৫৫, অথচ জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত সংগ্রামে ভরা।

আল্লাদী বেগম জানালেন, গত ২৫ বছর ধরে তিনি শাড়ি তৈরির সূতা প্রস্তুত করছেন। এ কাজ থেকে সাপ্তাহিক আয় হয় ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। এ সামান্য আয়ে চলছে তিন সদস্যের পরিবার। তার একটি মাত্র ছেলে, পড়ে কলেজে। তার পড়াশোনার খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হয়।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় তাঁতকল মালিক আব্দুল কুদ্দুসের ২০টি তাঁতকলের জন্য প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ পিস শাড়ির সুতা পেঁচিয়ে দেন। এ ছাড়াও সুতা ছিঁড়ে গেলে তা জোড়া দিতে হয়। কঠোর পরিশ্রম করে তিনি জীবনের চাকা চালিয়ে নিচ্ছেন। অন্য একটি বাড়িতে ঢুকতে দেখা মেলে ১০ বছরের শিশু সিফাত হোসেনের। সিফাত আগে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত, কিন্তু সংসারের অভাবের কারণে পড়াশোনা ছেড়ে এখন সুতা পেঁচানোর কাজে যুক্ত। বাবা-মার কষ্ট কমাতে কাজ করে। যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের খরচ কিছুটা মেটে বলেও জানায় সিফাত।

এদিকে, নবম শ্রেণির ছাত্র ইমরান আলীও তাঁতকলে কাজ করছে। ইমরান জানায়, স্কুলের পর সুতা তৈরির কাজ করি। এতে সংসারের কিছুটা অভাব মেটে।

তাঁতপল্লীর মানুষগুলো কঠোর পরিশ্রম করে জীবনের ঘানি টানছে। শৈশবে শ্রমের বোঝা তাদের হাসিখুশি জীবন কেড়ে নিয়েছে। প্রয়োজন সরকারি সহায়তা ও সামাজিক সচেতনতা, যা এসব সংগ্রামী মানুষের জীবনমান উন্নত করতে পারে।

সাটুরিয়ার ইউএনও ইকবাল হোসেন বলেন, শিশুদের শ্রমিক হিসেবে কাজ করানো আইনত দণ্ডনীয়। আমরা শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button