sliderশিরোনামস্থানীয়

‘সাংবাদিক সাবধান, মেয়রের কথা বললে মাথা থাকবে না’

জামালপুরের বকশীগঞ্জে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ ফেইসবুকে শেয়ার করায় এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছেন মেয়রের ‘বডিগার্ড’ হিসেবে পরিচিত মজনু খান।
মজনু খান কমেন্টে লিখেন, ‘সাংবাদিক সাবধান মেয়রের কথা বললে মাথা থাকবে না।’
তবে বিষয়টি মজা করে লিখেছেন বলে দাবি করেন তিনি। আর বকশীগঞ্জ পৌর মেয়রের দাবি এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই।
জানা যায়, গত ১৮ এপ্রিল বকশীগঞ্জে ‘পুলিশের ধাওয়ায় কৃষকের মৃত্যু, সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ মেয়রের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে স্থানীয় জনদ্বীপ ডটকম নামের একটি অনলাইনের সংবাদ নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন সালাম মাহমুদ নামে বকশীগঞ্জের স্থানীয় এক সাংবাদিক।
রবিবার ১৯ এপ্রিল সালাম মাহমুদের শেয়ার করা সেই পোস্টে বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের ‘বডিগার্ড’ হিসেবে পরিচিত মজনু খান ‘সাংবাদিক সাবধান মেয়রের কথা বললে মাথা থাকবে না’ লিখে কমেন্ট করেন।
পরবর্তীতে অনেকে তার এই মন্তব্যের স্ক্রিনশট ফেইসবুকে ছড়িয়ে দিলে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে। ফেইসবুক পোস্টে সরাসরি সাংবাদিকদের নিয়ে এ ধরনের মন্তব্যকে সাংবাদিকের প্রতি হুমকি হিসেবে অভিহিত করছেন জামালপুরের স্থানীয় সাংবাদিকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়রের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত মজনু খান জানান, ‘আমি মেয়রের সঙ্গে থাকি, তবে আমি তার বডিগার্ড নই। স্থানীয় সাংবাদিক সালাম মাহমুদ আমার বোন জামাই। আমি মজা করে তার পোস্টে ওই মন্তব্য করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমি আসলে সেভাবে ভাবিনি। পরে সবাই এটা নিয়ে কথা বললে আমি আমার মন্তব্যটি সরিয়ে নিয়েছি।’
ফেইসবুকে সংবাদটি শেয়ারকারী সালাম মাহমুদ নামে স্থানীয় ওই সাংবাদিক জানান, ‘মজনু খান আমার এলাকায় বিয়ে করেছেন। এছাড়া তিনি আমার তেমন কোনো আত্মীয় না। তিনি তার মন্তব্যের মাধ্যমে সরাসরি সাংবাদিকদের হুমকি দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ অনেকের পরামর্শে আমি আমার পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু সবকিছুর স্ক্রিনশট আছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জে পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর বলেন, ‘আমার কোনো বডিগার্ড নেই। জনগণই আমার বডিগার্ড। ফেইসবুকে কে কী মন্তব্য করেছে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। স্থানীয় সাংবাদিকরা নিজেদের বিরোধের কারণে ফেইসবুকে একেকজন একেক কথা লিখছেন।’
উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল বকশীগঞ্জের নঈম মিয়ার বাজারে লকডাউন ভেঙে জনসমাগমের ঘটনা ঘটলে উপজেলা প্রশাসন সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি দেখে বাজারে আসা লোকজন হুড়োহুড়ি করে পালাতে গেলে সিরাজুল হক (৫০) নামে এক কৃষক হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে যায়।
পরে তাকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কৃষককে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য দৈনিক ইত্তেফাকের বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি শাহীন আল আমীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম।
সুত্র : দেশ রূপান্তর

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button