sliderস্থানীয়

সঙ্গীতশিল্পী খালিদকে বাবা-মায়ের পাশে গোপালগঞ্জে দাফন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জে গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আশি ও নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ‘চাইম’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট খালিদ সাইফুল্লাহ আনোয়ার।

মঙ্গলবার বাদ জোহর গোপালগঞ্জে এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার পর গেটপাড়া পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফণ করা হয়।

এদিকে, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনপ্রিয় এ সঙ্গীতশিল্পীর প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহসিন উদ্দীন।

মঙ্গলবার ভোর ৪টায় খালিদ সাইফুল্লাহ’র লাশ গোপালগঞ্জ শহরের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ খবর পেয়ে সকাল থেকে প্রিয় শিল্পীকে এক নজর দেখতে বাড়িতে এসে ভীড় জমায় সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী ও স্বজনরা। এ সময় সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সোমবার সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে, নাতি খাতি বেলা গেল, যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, সরলতার প্রতীমার মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শ্রষ্টা এই গুণী শিল্পী।

ওইদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শিল্পী খালিদ সাইফুল্লাহকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রীণ রোডের কমফোর্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর রাত ১১টায় ঢাকার গ্রীণ রোড জামে মসজিদে খালিদ সাইফুল্লাহ প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

পারিবারিকসূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন খালিদ। একাধিকবার হৃদরোগের চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।

১৯৬৩ সালে গোপালগঞ্জ শহরের কলেজ রোডের বনেদি মুসলিম পরিবারে খালিদ সাইফুল্লাহ আনোয়ার জম্ম গ্রহণ করেন। পরিবারে তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তার বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বি এ হেমায়েত উদ্দিন ও মা আনোয়ারা বেগম। অনেক আগেই গত হয়েছেন তারা। ছোট বেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। স্থানীয় শিল্পকলা অ্যাকাডেমি ও পারিবারিক পরিমণ্ডলে শৈশবে তার সঙ্গীত চর্চা শুরু হয়। ছাত্রজীবনেও একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান। আশির দশকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ৮৩ সালে সমমনা শিল্পীদের নিয়ে তিনি‘চাইম’ নামে একটি ব্যান্ড দল গঠন করেন। তিনি ছিলেন চাইম-এর ভোকালিস্ট। ওই সময় খালিদ সাইফুল্লাহ’র কণ্ঠে বেশ কিছু গান হিট হয়। যা পরবর্তীতে ব্যান্ড দল চাইমকে জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে যায়। তার ওইসব জনপ্রিয় গান আজও মানুষের মুখে মুখে বাজে।

সঙ্গীতশিল্পী খালিদ সাইফুল্লাহ’র স্ত্রী শামীমা জাহান ও একমাত্র ছেলে আরিক যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। তার বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহ উদ্দিন আহসান গোপালগঞ্জে থাকেন। মেজ ভাই ছিলেন বিখ্যাত আইনজীবি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা’র) প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ড. মহিউদ্দিন ফারুক।

সঙ্গীতশিল্পী খালিদ সাইফুল্লাহর জানাজায় বাংলাদেশের জনপ্রিয় গীতিকার প্রিন্স মাহমুদসহ জেলার সর্বস্তারের মানুষ অংশ নেয়।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button