জনি আহমেদ, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) সংবাদদাতা : জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রিকায় গত ২২ সেপ্টেম্বর ভিক্ষা করে সংসার চলে যাত্রীছাউনিতে থাকেন মা-মেয়ে শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। নিয়ামতপুর উপজেলার সংবাদাতা জনি আহমেদ স্বাক্ষাতকার নিতে গেলে নিয়ামতপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের নজরে আসে বিষয়টি।
এরপর প্রতিবন্ধী মা সুলতানা ইয়াসমিন (৪৫) ও মেয়ে তানজিলা খাতুন (১৬) গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। এখন যাত্রীছাউনি সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
জানা যায়, সুলতানা ইয়াসমিন বিকলাঙ্গ হওয়ায় স্বামী সংসার ছাড়তে হয়। এরপর সৎ মা তাদের বাড়িতে জায়গা দেয়নি। তাদের জীবনে থেকেই নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। বাধ্য হয়ে যাত্রী ছাউনিতে থাকছিলেন তারা তারা।
নওগাঁর জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালাহৈর গ্রামের সুলতানা ইয়াসমিন (৪৫) ও মেয়ে তানজিলা খাতুন (১৬) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী মা ও মেয়ে রাস্তা-ঘাটে, হাট-বাজারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল টাকা পয়সা তুলে সংসার চালাতেন। যাত্রীছাউনিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে জামা কাপড়। এঁটো প্লেটে মাছি ভনভন করছে। দুর্গন্ধে আশপাশে দাঁড়ানোর উপায় নেই।
যাত্রীছাউনী এখন তাদের বসতঘর। অসহ্য ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন মা। নেই ওষুধ কেনার টাকা। চাল না থাকায় মাঝে মধ্যে রান্না হয় না।
তানজিলা খাতুন বলেন, আমার বাবা আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমাদের একটা থাকার ঘর নাই। মাকে নিয়ে খুব কষ্টে থাকি। মায়ের ওষুধ কেনার টাকা নাই। মাকে চিকিৎসা করতে হবে। সমাজের কোন হৃদয়বান ব্যক্তি যদি আমাদের সাহায্য ও ঘর দিতেন। তাহলে আমাদের আর এভাবে রোদ বৃষ্টিতে কষ্ট হত না।
স্থানীয় বাসিন্দা চেন মাষ্টার আবুল কাশেম বলেন, যাত্রীছাউনিতে তারা বসবাস করায়। দুর্গন্ধে আশপাশে দাঁড়ানোর উপায় নেই। বাধ্য হয়েই বাসের জন্য অন্য জায়গায় দাঁড়াচ্ছে যাত্রীরা। তাদের থাকার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সাদিকুর রহমান মন্ডল বলেন, আমাকে ইউএনও মহোদয় বিষয়টি অবগত করলে আমি ঘটনা স্থানে যায়। মা ও মেয়েকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাঁদের অবশ্যই একটা ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।