নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ‘শেখ হাসিনা সরকারকে স্বৈরাচার বানানোর ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা কি কম ছিল?’ এমন প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকতার পেশায় আছেন। এটি অত্যন্ত আদর্শিক পেশা, সম্মানজনক পেশা আপনারা কি এ কথা অস্বীকার করতে পারবেন?’
মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, এমন কোনো পেশা, এমন কোনো শ্রেণি নেই যাদের মাথা কিনে নেয়নি স্বৈরাচার সরকার এবং সাহায্য-সহযোগিতা পায়নি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বৈরাচারের পতনের ইতিহাস এটা। এই স্বৈরাচারকে এত বড় স্বৈরাচার হওয়ার পেছনে অনেক পেশাজীবী, অনেক শ্রেণীর মানুষের কুকর্ম জড়িত আছে। আবার তাদের ‘বাহবা’ দেয়ার মানুষও আছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক নেতাদের সাথে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি সভাপতি বলেন, ‘স্বৈরাচারের সাথে কেন গেছে সাংবাদিকরা। তারা হলো জাতির বিবেক, আমাদের ভুলত্রুটি ধরিয়ে, আমাদেরকে শিক্ষা দেয় আমাদেরকে চলার পথ শেখায়, তারা কুকর্মের সাথে কেন সম্পৃক্ত হলেন। একমাত্র কারণ হচ্ছে তাদের লোভ-লালসা। একটা লোভ হলো অর্থ সম্পদের, আরেকটা হলো ক্ষমতার। এই কারণেই তারা আদর্শিক পেশায় থেকেও স্বৈরাচারীর দোসর হিসেবে কাজ করেছে। আমি শুধু সাংবাদিকদের পেশার কথা বলছি না, অন্য লোকজনদেরও বলছি।
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে আন্দোলন করেছি। এই আন্দোলনে কত মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে, কত মানুষ মিথ্যা মামলা খেয়েছে, জেল খেটেছে। কত মানুষ স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার ছেড়ে পালিয়ে জীবন যাপন করেছে। অন্যায়ভাবে কত নেতার বিরুদ্ধে আদালতে রায় হয়েছে। কেউ জেল খেটেছে, অনেকে এখনো খাটছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যারা ১৬ বছর স্বৈরাশাসকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি এবং অন্যায়ভাবে নির্যাতিত হয়েছি। স্বৈরাচার যেখানে অন্যায়ভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। লুটপাট করে দেশের অর্থ বাইরে পাচার করে দিয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা বিদ্যুৎ সেক্টরেও চুরি করে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের ওপর বিলের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে।’
বিএনপি সভাপতি বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনে আমাদের সন্তানরা অংশগ্রহণ করেছে। এটা নিশ্চয়ই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এই আন্দোলন কোনো কালেই সফল হতো না, যদি এই আন্দোলন শুরু করে সমাপ্তির মধ্য দিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে না পারত। এই আন্দোলনে আমরা ছিলাম, রাজনৈতিক দলগুলোসহ স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছি এবং যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের যে ক্ষোভ ছিল এই ১৬ বছরে সেটার প্রতিফলন হয়েছে ছাত্র আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, এ স্বৈরাচারীরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।