
নড়াইলে শুক্রবার শুরু হচ্ছে সপ্তাহব্যাপী সুলতান মেলা। বিশ্ব বরেণ্য চিত্র শিল্পী এসএম সুলতানের ৯১তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও গ্রামীণ খেলাধুলা দিয়ে সাজানো হয়েছে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান মালা। সুলতান মঞ্চে শুক্রবার বিকেলে মেলার উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি। জেলা প্রশাসন এবং এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় এবং পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোঃ লিঃ-এর পৃষ্টপোষকতায় সপ্তাহব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, ভলিবল প্রতিযোগিতা, হা-ডু-ডু, কুস্তি, ষাঁড়ের লড়াই, ঘোড়ার গাড়ির দৌড়, আলোচনাসভা, সুলতান পদক প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কারবিতরনী। মেলায় বিভিন্ন প্রকার অর্ধশতাধিক স্টল রয়েছে। মেলা ২৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে বলে জানান, সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু। তিনি জানান, এ বছর সুলতান পদক প্রদান করা হবে বরেন্য চিত্র শিল্পী আব্দুল মান্নানকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাঙালি জাতিসত্তার গভীরতম অন্তরভূমিতে যে অমিত শক্তি সুুপ্ত ছিল সহস্র বছর ধরে তারই নান্দনিক শৈল্পিক প্রকাশের অন্যতম সূর্যসারথি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। ১৯২৪ সালের ১০ আগষ্ট তৎকালিন মহকুমা শহর নড়াইলের চিত্রা নদীর পাশে সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা, পাখির কলকাকলীতে ভরা মাছিমদিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন শিল্পী এস এম সুলতান। তার পিতা মোঃ মেছের আলি মাতা মোছাঃ মাজু বিবি।
চেহারার সঙ্গে মিলিয়ে পিতা মাতা আদর করে নাম রেখেছিলেন লাল মিয়া। চিত্রশিল্পী এস, এম, সুলতানের ৭০ বছরের বোহেমিয়ান জীবনে তিনি তুলির আঁচড়ে দেশ, মাটি, মাটির গন্ধ আর ঘামে ভেজা মেহনতী মানুষের সাথে নিজেকে একাকার করে সৃষ্টি করেছেন “পাট কাটা”, “ধানকাটা”, “ ধান ঝাড়া”, “ জলকে চলা”, “ চর দখল”, “গ্রামের খাল”, “মৎস শিকার”, “গ্রামের দুপুর”, “নদী পারা পার”, “ধান মাড়াই”, “জমি কর্ষনে যাত্রা”, “মাছ ধরা”, “নদীর ঘাটে”, “ধান ভানা”, “গুন টানা”, “ফসল কাটার ক্ষনে” , “শরতের গ্রামীন জীবন”, “শাপলা তোলা” মত বিখ্যাত সব ছবি। ১৯৫০ সালে ইউরোপ সফরের সময় যৌথ প্রদর্শনীতে তার ছবি সমকালনী বিশ্ববিখ্যাত চিত্র শিল্পী পাবলো পিকাসো, ডুফি, সালভেদর দালি, পলক্লী, কনেট, মাতিসের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়। সুলতানই একমাত্র এশিয়ান শিল্পী যার ছবি এসব শিল্পীদের ছবির সঙ্গে একত্রে প্রদর্শিত হয়েছে। কালোর্ত্তীন এই চিত্রশিল্পী ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্স আটির্ষ্ট হিসেবে স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে রাষ্টীয় ভাবে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়েছিল। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শিল্পী সুলতান মারা যান। বাসস