sliderস্থানীয়

শিবালয়ে সার সংকটের অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা আদায়

শিবালয় প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের শিবালয়ে টিএসপি ও ডিএপি সার সংকটের কথা বলে এক শ্রেণির খুচরা বিক্রেতা কৃষকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এবার রবিশস্য মৌসুমে উপজেলার বেশির ভাগ খুচরা বিক্রেতা টিএসপি ও ডিএপি সার সংকটের কথা বলে কৃষকের কাছ থেকে ৫০ কেজির বস্তায় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে বেশি নিচ্ছেন। অতিরিক্ত টাকা না দিলে তাদের সার সংকটের কথা বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে কৃষক খুচরা বিক্রেতাকে বস্তা প্রতি অতিরিক্ত টাকা দিচ্ছেন তাদের গোপনে সার দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলার বাড়াদিয়া এলাকায় সার নিতে আসা একই এলাকার আরমান আলী, আমডালা এলাকার ছবেদ শেখ, গান্ধাইর গ্রামের ময়নাল শেখ, নালী এলাকার জয়নাল আলী, ষাইঘর তেওতা গ্রামের জিন্নাত শেখ, মহাদেবপুর এলাকার আমির উদ্দিনের মতো অর্ধ শতাধিক কৃষক জানান, বস্তা প্রতি টিএসপি সারের বাজার মূল্য এক হাজার ৩৫০ টাকা ও ডিএপি সার এক হাজার ৫০ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা সার সংকটের কথা বলে টিএসপি এক হাজার ৫৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৬৫০ টাকা ও ডিএপি এক হাজার ২৫০ টাকা থেকে এক হাজার ৩৫০ টাকা নিচ্ছে।

উপজেলার বরংগাইল এলাকার কৃষক হায়দার আলী বলেন, গত মঙ্গলবার তিনি বরংগাইল বাজারে গিয়ে খুচরা সার বিক্রেতা মিজানুর রহমানের কাছে দুই বস্তা ডিএপি সার কেনেন। তাঁর কাছ থেকে বস্তা প্রতি ডিএপি সার এক হাজার ৩০০ টাকা করে দুই বস্তা সারের দাম দুই হাজার ৬০০ টাকা নেন মিজানুর। তবে খুচরা সার বিক্রেতা মিজানুর রহমান বস্তা প্রতি অতিরিক্ত ২৫০ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, কৃষক হায়দার আলীর কাছে তিনি বস্তা প্রতি ডিএপি সার এক হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

উপজেলার উথলী ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার আশরাফুল আলম রাজা বলেন, অল্প কয়েক দিন টিএসপি সারের চাহিদা একটু বেশি ছিল। তবে সার সংকট ছিল না।

উপজেলার আমডালা বাজারের খুচরা বিক্রেতা দিলিপ সাহা বলেন, সার সংকটের কারণে তারা কৃষকদের চাহিদা অনুয়ায়ী সার দিতে পারেননি।

একই বাজারের খুচরা বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম সোহেল বলেন, টিএসপি এক বস্তা সারের দাম ১ হাজার ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়। ওই দামে সার বিক্রি করলে ২৫ টাকা লাভ হয়। কিন্তু সার দোকানে আনতে খরচই হয় ২৫ টাকার বেশি। এ কারণে সার ডিলাররা কিছুটা বেশি দাম নেন।

এ ছাড়া,এ ইউনিয়নে বেশি রবিশস্য আবাদ করেন কৃষক। সে তুলতায় সারের বরাদ্দ দেওয়া হয় না। কিছু দুর্নীতিবাজ খুচরা বিক্রেতা সার সংকটের কথা বলে কিছু কৃষকের কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন।

তবে উপজেলার শিবালয় ইউনিয়নের সুধীর চন্দ্র নন্দীসহ অনেক খুচরা বিক্রেতা বলেন, কিছু টিএসপি ও ইউরিয়া সার দলা ধরে যাওয়ায় কৃষকরা সার কিনতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৯ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৭৩৫ হেক্টরে ভুট্টা, ১ হাজার ৫৮৭ হেক্টরে পেঁয়াজ, ১৩৩ হেক্টরে রসুন, ৬১০ হেক্টরে মরিচ ও ৫৪৮ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস ষূত্র ঝানায়, এ উপজেলায় আটজন বিসিআইসি সার ডিলারসহ ৫৭ জন খুচরা বিক্রেতা রয়েছেন।কৃষকদের চাহিদার তুলনায় সার কম বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। কৃষকের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ব্যাপারে মনিটরিং করা হচ্ছে।

এ ছাড়া কৃষকরা যদি নির্দিষ্ট কোনো সার ডিলারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।আর ডিলারদের আমদানী করা সারে যদিওবা দলা ধরে থাকলেও গুণগত মান নষ্ট হয়নি।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ বেলাল হোসেন বলেন, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সার ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button