পতাকা ডেস্ক: পূর্বঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’। এই গণজমায়েত থেকে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে না। তবে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ তৈরির যে উদ্যোগ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে সেটির পক্ষে অবস্থান নিয়ে ঘোষণাপত্রটি কেমন হবে তা জানাবে সংগঠনটি।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ।
তিনি বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান রক্ত দিয়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আতিক গাজীর হাতের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমার ভাইদের চোখের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। এই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমার হাজারো ভাইয়ের শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান। আমরা এই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছি। আমরা রাষ্ট্রকে বলেছি, আমাদের যেন এ ব্যাপারে সমর্থন দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বলেছি, এই ব্যাপারে যেন আমাদের সমর্থন জানায় এবং এই ঘোষণাপত্র গ্রহণ করে। কারণ ঘোষণাপত্র ঐতিহাসিক দলিল। এই ঐতিহাসিক দলিলকে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। এই ঐতিহাসিক দলিলের মধ্য দিয়ে বস্তাপচা রাজনীতির অবসান হবে। সরকার আমাদের এই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে ইতিবাচক কথা বলেছে। সরকার এই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য রিফাত রশীদ, দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি,সরকার তার জায়গা থেকে পুরো বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধের জায়গায় এনেছে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্রটি আসা উচিত। প্লাটফর্ম থেকে রাষ্ট্র যখন এই দায়িত্ব নিয়ে নেয়, আমরা এটিকে সাধুবাদ জানাই। রাষ্ট্র ও সরকার ঐক্যের জায়গায় এনে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়, জাতীয় ঐক্য টেকসই হয়।
এর আগে, সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্রটি গৃহীত হবে। গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিছুদিনের মধ্যেই সর্বসম্মতিক্রমে এ ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করা হবে এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।
তার আগে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। ওই দিন বিকেল তিনটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করে এ ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা জানান তারা।