sliderউপমহাদেশশিরোনাম

শবরীমালা বিতর্ক: প্রতিবাদে কেরালায় ৬২০ কি.মি. নারীপ্রাচীর

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরও কেরালার শবরীমালা মন্দিরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) রাস্তায় নেমে আসেন লক্ষাধিক নারী। তারা গড়ে তোলেন ৬২০ কিলোমিটার দীর্ঘ নারীপ্রাচীর।
মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) বছরের প্রথম দিন সমান অধিকারের দাবিতে কেরালার কাসারগড় থেকে তিরুবনন্তপুরমের বেল্লাইয়াবেলম পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে এই প্রাচীর গড়া হয়। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা ছিলেন কাসারগড়ে মিছিলের একটি প্রান্তে। তিরুবনন্তপুরমে মিছিলের অন্যপ্রান্তে ছিলেন সিপিআইনেত্রী বৃন্দা কারাত। রাজ্য সরকার এই আয়োজনের অর্থায়ন করে।
এই নারী প্রাচীরের উদ্যোক্তা সিপিএম, সিপিআই, শ্রী নারায়ণ ধর্ম পরিপালন যোগম, কেরল পুলায়ার মহাসভাসহ মোট ১৭৬ টি সংগঠন। সংবাদমাধ্যমে উদ্যোক্তারা বলেন, দীর্ঘ এই প্রাচীর গড়তে ৩১ লাখ নারী থাকলেই হতো, কিন্তু এই প্রাচীর গড়তে প্রায় ৫০ লাখ নারী পথে নেমে আসেন।
মঙ্গলবারের মিছিলে কেরালার ২০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছিলেন মালয়ালাম লেখক এম লীলাবতী, পি বৎসলা, খাদিজা মুমতাজ, অ্যাথলেট মার্সি কুত্তান, বক্সার কে ভি লেখা, শিল্পপতি পার্বতী তিরুবোথ, রিমা কল্লিঙ্গল প্রমুখ।
রাস্তার একদিকে যেমন নারীপ্রাচীর গড়ে তোলা হয়, তেমনি প্রতিবাদের আরেকটি প্রাচীর গড়েন পুরুষরা। সেই প্রাচীর থেকে প্রগতিশীল মূল্যবোধকে সমর্থন করার শপথ নেওয়া হয়।
নিজেদের নারীদের সমান অধিকারে বিশ্বাসী বললেও তারা বলেন, তারা কেরালাকে পাগলা গারদে পরিণত হতে দেবেন না। এমনকি ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে লড়াই করার কথাও বলেন পুরুষ প্রাচীরে অংশগ্রহণকারীরা ।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শবরীমালা মন্দিরে মেয়েদের ঢুকতে যেভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে, তাতে এই নারীপ্রাচীর গড়া প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।
সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সিপিএম নেতা কোদিয়ারি বালকৃষ্ণান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যারা নারীপ্রাচীরের বিরোধিতা করছেন, তারা রক্ষণশীল।
প্রসঙ্গত, কেরালার শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত কোনো নারী ঢুকতে পারতেন না। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একশ বছরের রীতি ভেঙে প্রথমবারের মতো মন্দিরটিতে প্রবেশাধিকার পান নারীরা। কিন্তু শতাব্দী প্রাচীন ধর্মীয় রীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে মরিয়া হাজারও ভক্ত নারীকে মন্দিরে ঢুকতে দিচ্ছিল না।
এর প্রতিবাদে কয়েকমাস আগেই এই নারীপ্রাচীর গড়ার পরিকল্পনা হয়। তখন থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। ভারতের সংসদের বিরোধী দল কংগ্রেসের দাবি, কেবল প্রগতিশীল হিন্দু সংগঠনগুলোকেই এই কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আবার অনেকে অভিযোগ করেন, সিপিএমের কর্মসূচিতে সরকারি তহবিল থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারি নারী কর্মচারীরা অংশ নিয়েছেন। কোনও দলীয় কর্মসূচিতে সরকারি কর্মীরা অংশ নিতে পারেন না বলেও মনে করেন প্রাচীরবিরোধীরা।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button