
শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘ফণী’। ভারতের ওডিশা উপকূল থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এ ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে তা এগিয়ে আসছে স্থলভাগের দিকে। ওডিশার গোপালপুর ও চাঁদবালি এলাকা দিয়ে ঝড়টি বয়ে যাবে। তারপর সেটি ওডিশার পুরি হয়ে প্রবেশ করবে পশ্চিমবাংলায়।
আগামীকাল শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই ঝড়টি ওডিশায় আছড়ে পড়বে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। সে সময় শক্তি বেড়ে গিয়ে ঝড়ের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ২০০ থেকে ২০৫ কিলোমিটার। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি যখন পশ্চিমবাংলায় ঢুকবে, তখন ঝড়ের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটারের বেশি। এরই মধ্যে ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে পর্যটকদের সরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারতে ইস্ট কোস্টের ১০৩টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। যাত্রা বাতিল করা ট্রেনগুলোর মধ্যে রয়েছে, করমণ্ডল এক্সপ্রেস, পাটনা-এরানাকুলাম এক্সপ্রেস, নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস, হাওড়া-হায়দারাবাদ ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস, ভুবনেশ্বর-রামেশ্বরম এক্সপ্রেস। এ ছাড়া অন্য দুই ট্রেনকে অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তীব্র ঝড়-বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে ওডিশা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ওডিশার ১৯টি জেলাসহ অন্ধ্রপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী বেশ কয়েকটি জেলায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।
গতকাল বুধবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়টি পুরি থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। সেটি ক্রমশ উত্তর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পর্যটকদের পুরি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ওডিশা প্রশাসন। পুরি উপকূল থেকে ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার দুপুর নাগাদ প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেগে পুরিতে আঘাত হানতে পারে ‘ফণী’। এর প্রভাবে ওডিশার গজপতি, গঞ্জাম, পুরি, কেন্দ্রাপাড়া, কোরাপুট, রায়গাড়া ও কান্দামাল জেলাসহ ১৯ জেলায় প্রবল ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
‘ফণী’র প্রভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের কথা মাথায় রেখে তৈরি রাখা হয়েছে ভারতীয় নৌ-সেনা ও উপকূলরক্ষী বাহিনীকে। প্রস্তুত রয়েছে ভারতের জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও।
অন্যদিকে, ‘ফণী’র সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী দীঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর ও মন্দারমনিতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আজ সকাল থেকে ওই সব পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়া পর্যটকদের সমুদ্রে নামার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখা যাচ্ছে। সমুদ্র ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। ওয়াচটাওয়ার থেকে উপকূলে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমনি প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। উপকূলে রেস্কিউ সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। হুগলি বন্দরে ২ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সাগরে ৫ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।এনটিভি।