
সাফে ব্যর্থতার পর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে জয় দিয়ে শুরুর বাধ্যবাদকতা ছিল লালসবুজ জার্সীধারীদের। সেই কাজই করলেন জামাল, জীবন , সুফিল, বিপলুরা। লাওসকে ১-০ গোলে হারিয়ে আসরে দারুণ শুরু করলো বাংলাদেশ। ‘বি’ গ্রুপ থেকে সেমিতে যেতে এখন ৫ অক্টোবর ফিলিপাইনের বিপক্ষে এই মাঠে ড্র দরকার জেমি ডে বাহিনীর। অবশ্য ফিলিপাইনের কাছে লাওস হারলে বা ড্র করলেই বাংলাদেশ চলে যাবে শেষ চার।
সিলেটে লালসবুজদের জয়ের নায়ক মিডফিল্ডার বিপলু আহমেদ। খেলার আগে সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বর্তমান ফুটবলার বিপ্লব ভট্ট্যাচার্য এবং সাবেক কৃতি খেলোয়াড় শেখ আশরাফ আলী মাঠে রাখা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ট্রফি মাঠ থেকে নিয়ে আসেন। এরপরেই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উদ্বোধন করেন এবারের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নেপালের প্রতিপক্ষ তাজিকিস্তান।
সাফে নেপালের বিপক্ষে খেলা একাদশ থেকে তিনজনকে বাদ দিয়ে গতকালের একাদশ গঠন কোচ জেমি ডের। গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার সাথে লাওসের বিপক্ষে একাদশে চান্স পান স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন ও মিডফিল্ডার রবিউল হাসান। ৪-৪-২ ফরমেশনে শুরু থেকেই লাওসের উপর চড়াও হয়ে খেলা বাংলাদেশ দলের। কখনও দুই উইং দিয়ে কখনও মাঝমাঠ দিয়ে আক্রমন শানাতে তাকে বাংলাদেশ দল। সুযোগও এসেছিল গোলের। সিলেটের সন্তান স্ট্রাইকার মাহাবুবুর রহমান সুফিলের স্বার্থপরতায় ২৫ মিনিটে অবধারিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় লাল সবুজরা। ফাঁকায় বল পেয়ে তিনিস নিজে দূরূহ কোণ থেকে বল মারেন বাইরে। অথচ বক্সে তখন একেবারে অরক্ষিত জীবন। এর আগে ২২ মিনিটে রবিউল হেড করতে পারেননি বিপলুর ক্রসে। ২৯ মিনিটে জীবন নিজে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ১১ মিনিটে অবশ্য জীবন এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়েও যে তীব্র শট নেন তা পোষ্ট ঘেঁষে বাইরে যায়।
যদিও স্বাগতিক বাংলাদেশের তুলনায় প্রথমার্ধে গোলের ভালো সুযোগ তৈরী করে লাওসই। ৯ মিনিটেই সিপাসং বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ১৫ মিনিটে এই সিপাসংয়ের হেডও হয় লক্ষ্য ভ্রষ্ট। ৩২ মিনিটে থনিলাথের শট ডান দিকে শরীর ফেলে ঠেকান বাংলাদেশ কিপার রানা। লালসুবজদের আক্রমনাত্মক খেলায় বিপরীতে কাউন্টারে খেলতে থাকে লাওস। ছোট ছোট পাসে তারা আতংক ছড়াচ্ছিল বাংলাদেশের রক্ষণভাগে।
বিরতির পরপরই সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন সুফিল। ওয়ালীর ক্রসে বিপক্ষ ডিফেন্ডারের ভুলে বক্সের উপর ফাঁকায় বল পান সুফিল। সামনে শুধু লাওসের গোলরক্ষক। বক্সের সামনে থেকে শটও নেন সুফিল। কিন্তু সেই শট সবাইকে হতাশ করে চলে যায় পোষ্ট ঘেঁষে। ৪৯ মিনিটে লাওসের থনিলাথের শট ক্রসবারে বাতাস দিয়ে যায়। ৫৪ মিনিটে এই ফরোয়ার্ডের হেড অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট। এর পরেই ৬০ মিনিটে কাংখিত গোল বাংলাদেশ দলের। সুফিলের ক্রসে জীবনের শট প্রতিহত হয় ডিফেন্সের গায়ে। ফিরতি বলে জীবনের হেড লাওসের কিপারের হাতে লেগে ক্রসবারে লেগে ফের মাঠে আসে। লাওসের রক্ষণ কর্মীর ক্লিয়ার করা বল আবার জীবনের পায়ে লেগে চলে যায় পোস্টের বাইরে গোললাইনের কাছে। সেখান থেকে বিপলুর নেয়া শর্ট গোলরক্ষকের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। সিলেটের সন্তান বিপলুর এই গোলে সিলেট স্টেডিয়ামের হাজার বিশেক দর্শক সহ উল্লাসে মাতেন দেশের ফুটবল প্রেমীরা। ৬৩ মিনিটে বাদশার হেডে ব্যবধান বাড়েনি লাওসের শেষ প্রহরীর দৃঢ়তায়। ৮৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বদলী ইব্রাহিম এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়েও শেষ পর্যন্ত গোলরক্ষকের বাধায় ব্যবধান বাড়াতে পারেননি।
এই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ দলে অভিষেক হয় ইব্রাহিম ও রবিউলের।