sliderআন্তর্জাতিক সংবাদশিরোনাম

রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে আলজাজিরার নতুন ভিডিও

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর নৃসংশ নির্যাতনের একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক আলজাজিরা টেলিভিশন।
রোববার (২৪ নভেম্বর) আলজাজিরার প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, শত শত রোহিঙ্গাকে সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনারা। সেনা সদস্যরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে নির্যাতন চালাচ্ছে।
এতে দেখা যায়, দেশটির সেনাসদস্যরা দলবদ্ধভাবে একজন একজন করে রোহিঙ্গাদের নানা কৌশলে নির্যাতন করছেন। কেউ বুট জুতা দিয়ে লাথি মারছেন। কেউ বন্দুক দিয়ে যত্রতত্র পেটাচ্ছেন। একজন মুখে লাথি মেরে ক্লান্ত হলে অপরজন এসে পুনরায় শুরু করছে। আর এসব দেখে বাকি রোহিঙ্গারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে তাকিয়ে আছে সেদিকে।
সাঈদ নামে এক রোহিঙ্গা তরুণ আলজাজিরাকে বলেন, একজন সৈন্য আমার মাথা থেকে শুরু করে পুরো শরীরে লাথি মারা শুরু করে। তারপর সে বলে, তোমাদের সব মুসলিমকে মেরে ফেলা হবে। আমরা অপরাজেয়।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পানিতে পড়ে থাকা সন্তানদের লাশ তুলে আনছে তাদের পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারগুলো জানাচ্ছে, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়ে অনেকের শিশু সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
রাজিমা বেগম নামের এক নারী বলেন, তারা আমাদের বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারপর আমাদেরকে আটক করে একত্র করে রাখে। আমাদের মুখ এমন দিকে ঘুরিয়ে রাখা হয় যাতে আমরা আমাদের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য না দেখতে পারি, আমাদের বাড়িঘর আগুনের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারি।
মিয়ানমার সেনাদের হাতে ধর্ষণের শিকার এক নারী বলেন, তারা আমাকে ধরে একটা ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। পাঁচ মাস পর আমি জানতে পারি আমি অন্তঃসত্ত্বা। আমার পেটে বাচ্চা থাকলেও আমার কিছুই করার ছিল না- এ কথা বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নৃসংশ নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের মুখে প্রাণ বাঁচাতে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তারা এখনও নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেনি। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ ছাড়াও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার নানা অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে। কিন্তু এখনও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেই চলেছে দেশটি।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button