বিবিধশিরোনাম

রোহিঙ্গা নির্যাতন জাতিগত নিধনের বহিঃপ্রকাশ : জর্ডানের রানি

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জর্ডানের রানি রানিয়া আল আব্দুল্লাহ। এসময় রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও লোমহর্ষক নির্যাতনের কথা শুনে রানি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। তিনি ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি নিরীহ রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, খাদ্য ও স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে বাংলাদেশ সরকার যে মানবিকতার পরিচয় দেখিয়েছে তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন রানি রানিয়া। তিনি বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেটা জাতিগত নিধনের বহিঃপ্রকাশ। বিশ্ব সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে জর্ডানের রানি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছলে সরকারি, বেসরকারি ও এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে স্বাগত জানান। হাজার হাজার রোহিঙ্গা নর-নারী ও শিশু তাকে এক নজর দেখার জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভিড় জমান। এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের হাত নেড়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ আন্তরিকতা প্রকাশ করেন। পরে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য গড়ে তোলা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের স্কুল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গা শিশুদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন, খোঁজখবর নেন। পরে রানি রানিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলমান ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। রানি রানিয়া প্রায় ঘণ্টাব্যাপী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করেন।
ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে রানি রানিয়া আল আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, জ্বালাও পোড়াও, লুটপাট ও নির্যাতনের বর্ণনা রোহিঙ্গাদের কাছে থেকে শুনেছেন। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেটা জাতিগত নিধনের বহিঃপ্রকাশ। জর্ডান সরকার মিয়ানমারের এমন হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানায়।
রানি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে যে মানবিকার পরিচয় দিয়েছে তা রোহিঙ্গারা কোন দিন ভুলতে পারবে না। রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তার জন্য বাংলাদেশকে জর্ডানের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জর্ডান ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে বলে রানি রানিয়া আল আব্দুল্লাহ আশ্বস্ত করেন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় রানির সঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী চুমকি, কক্সবাজার-৩ (কক্সবাজার সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সায়মন সরকার কমল, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকসহ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন ও পুলিশ সুপার ড. একে ইকবাল হোসেন, ত্রাণ ও শরণার্থী বিষয়ক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জর্ডানের রানী রানিয়া আব্দুল্লাহ কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনের উপর ভিত্তি করে কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। র‌্যাব, পুলিশ, অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার, বিজিবিসহ আইন প্রয়োগ সংস্থার বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কড়া নজরদারি রেখেছে। দুপুর ১টার দিকে রানি রানিয়া কক্সবাজারের উদ্দেশে কুতুপালং ক্যাম্প ত্যাগ করেন। সুত্র : নয়া দিগন্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button