শিরোনামশীর্ষ সংবাদ

রোহিঙ্গাদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে ওআইসি’র প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামী সম্মেলন সংস্থাকে (ওআইসি) বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে ওআইসিকে অবশ্যই নেপিদোর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।
হযরত মুহাম্মদ (স:) এর বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়ানোর অমোঘ বাণীর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’
আজ শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী ইসলামী সম্মেলন সংস্থার ৪৫তম পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের সভার (সিএফএম) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইসলামী সম্মেলন সংস্থাকে অবশ্যই মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী তাদের অধিবাসী রোহিঙ্গাদের দেশে নিরাপদে ফেরত নিয়ে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিও আমাদের সবার মত মর্যাদার সাথে বাঁচার এবং জীবন জীবিকার অধিকার রাখে।’
কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং ওআইসি মহাসচিব ইউসুফ এ ওথাইমিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে রিপাবলিক অব কোটি ডে’লভয়রী (আইভরীকোস্ট) এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ৪৪ তম সিএফএম’র সভাপতি মার্সেল আমন-তানোহ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর কাছে ৪৫ তম সিএফএম’র সভাপতিত্ব হস্তান্তর করেন।
তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং ওআইসি সম্মেলনের সভাপতির প্রতিনিধি বেকির বোজড্যাগ সহ এশিয়া, আরব এবং আফ্রিকার পক্ষে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত ভাইস মিনিস্টার আব্দুররাহমান মোহাম্মাদ ফাসির, সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দেল বিন আহমেদ আল জুবায়ের এবং সেনেগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রী সিদকি কাবা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, নিপীড়িত মানবতার জন্য আমরা আমাদের চিত্ত ও সীমান্ত দুই-ই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। মিয়ানমারের প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা আশ্রয় দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে তাদের বাস্তচ্যুত হয়ে এদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা) জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ব্যথায় ব্যথিত। কারণ, আমার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানসহ পরিবারের ১৮জন সদস্য নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে ছয় বছর দেশে ফিরতে পারিনি, উদ্বাস্তু হিসেবে বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাজেই জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের মর্যাদা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমি ওআইসিকে তাদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button