কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কার্যক্রমে আরও ৮০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড (১ কোটি ২ লাখ ইউএস ডলার) অনুদান দিয়েছে যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সংস্থা ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট।
ডিএফআইডির সদ্য এ অনুদানের মাধ্যমে ডব্লিউএফপি ২ লাখ ৭০ হাজার ৬০০ শরণার্থীকে ইলেকট্রনিক ভাউচারের (ই-ভাউচার) আওতায় তিন মাস খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে সক্ষম হবে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত পরিবারবর্গ ২৫টি ডব্লিউএফপি-সমর্থিত দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারে।
ই-ভাউচার আউটলেট থেকে কেনাকাটা করার জন্য পরিবারগুলো প্রতি মাসে সদস্যপ্রতি ৯ ইউএস ডলার (৭৭০ টাকা) করে পেয়ে থাকে। এ অর্থ ডব্লিউএফপির একটি প্রে-পেইড অ্যাসিসটেন্ট কার্ডে থাকে যা ব্যবহার করে পরিবারগুলো দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে পারে, যেমন টাটকা ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, ডিম, মুরগি, মসলা এবং অন্যান্য সামগ্রী কিনতে পারে।
ই-ভাউচারের দোকানগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দ্বারা পরিচালিত হয়, তাই স্থানীয় জনগণ আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ পায়।
এ প্রসঙ্গে ডব্লিউএফপির প্রতিনিধি ও কান্ট্রি ডিরেক্টর রিচারড রেগান বলেন, যুক্তরাজ্যের এ অনুদান আমাদের ই-ভাউচারের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তামূলক কার্যক্রমগুলো অব্যাহত রাখার সুযোগ করে দিয়েছে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাজার ব্যবস্থাপনা স্থাপনে ই-ভাউচার সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। এই দোকানগুলোতে প্রাপ্ত খাদ্য সামগ্রীর প্রায় সবই কক্সবাজারের বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত, তাই ই-ভাউচারের কারণে স্থানীয় জনগণও নানাভাবে উপকৃত হচ্ছে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি নাগাদ সব শরণার্থীকে ই-ভাউচারের আওতায় আনার ব্যাপারে ডব্লিউএফপি আশাবাদী।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী ডব্লিউএফপি প্রতি মাসে অন্তত ৮লাখ ৪২ হাজার ১০০ জন শরণার্থীকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে। এদের মধ্যে অর্ধেক শরণার্থী ই-ভাউচারের মাধ্যমে সহায়তা পেয়ে থাকে, এবং বাকি অর্ধেক সরাসরি খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির মাধ্যমে চাল, ডাল ও তেল পেয়ে থাকে। ডিএফআইডির সহযোগিতায় ডব্লিউএফপি ইতোমধ্যে একটি পরীক্ষামূলক কৃষি বাজার চালু করেছে যেখান থেকে পরিবারবর্গ বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী যেমন চাল, ডাল, তেল ইত্যাদি অনুদান হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। এসব বাজারের মাধ্যমে ক্যাম্পে বসবাসরত শরণার্থীরা টাটকা কৃষিপণ্য, মাছ, মাংস ইত্যাদি সহজেই সংগ্রহ করতে পারে।
ডিএফআইডির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকার কক্সবাজারে ডব্লিউএফপির কর্মকাণ্ডে উদারভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে চলেছে। ডিএফআইডি ইতোমধ্যে ২০১৭ সালে ১ কোটি ১৩ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড, ২০১৮ সালে ১ কোটি ৭০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড এবং ২০১৯ সালে ২ কোটি ৪ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড অনুদান রেখেছে।