বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তাদের আলোচনায় কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীকে। তারা আজকে উপযুক্ত সময়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন। পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে তারা আলোচনা করার জন্য এখানে (বঙ্গভবন) ডেকে নিয়েছেন। আন্দোলনের মূল ছাত্র নেতাদেরও নিয়ে এসে কথা বলেছেন। তারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলে কতগুলো মৌলিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আজ রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করে কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে, পার্লমেন্ট ভেঙে দিয়ে অতিদ্রুত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সিদ্ধান্ত হয়েছে, খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হবে। সেই সাথে মুক্তি দেয়া হবে সেই সমস্ত ছাত্র নেতা-কর্মী, ছাত্রনেতাদের, যাতে অন্যায়ভাবে পহেলা জুলাই থেকে বন্দী করে রাখা হয়েছে, যাদের রাজনৈতিক কারণে বন্দী করে রাখা হয়েছে। আরো সিদ্ধান্ত হয়েছে, বর্তমানে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দল কাজ করবে, ছাত্র নেতারা কাজ করবে।’
তিনি সবাইকে আহ্বান জানান,হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, সেই অবস্থায়-বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো কাজ করবেন। ‘আমি সমগ্র দেশবাসীকে আবেদন জানাতে চাই, আসুন, আমরা একটা বড় বিজয়, সাফল্য অর্জন করেছি। সেটা যেন আর অন্যদিকে প্রবাহিত না হয়। ক্রোধ, ঘৃণা বা প্রতিশোধের বশবর্তী না হয়ে আমরা যেন কাউকে আক্রমণ না করি। কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না করি। আমাদের যে সমস্ত বন্ধুরা, ভাইয়েরা-ধর্মীয়ভাবে যারা সংখ্যালঘু, তাদের ওপর যেন কোনো আক্রমণ না হয়। তাদের রক্ষা করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের সকল নেতা-কর্মীদের প্রতি আবেদন জানাতে চাই, কাউকে সুযোগ নিতে দেবেন না, দুবৃত্তরা বা দুষ্কৃতিকারীরা অন্যের ওপর আঘাত যেন করতে না পারে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করা হয়েছে। তিনি এই আন্দোলনে প্রতি মুহূর্তে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছেন। আর এই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকেও অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সেটা আমরা সফল হবো, ইনশাআল্লাহ, আপনারা ধৈর্য ধরুন।’
তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও লড়াই করছি। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে তারা অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে জেলে নিয়েছে। আমাদের প্রায় ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা মামলা দিয়েছে এবং অকথ্য নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে এই শেখ হাসিনা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের।
সূত্র : বিবিসি
