slider

রাজাপুরের টিএন্ডটি রোড ময়লার ভাগার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ রাজাপুরবাসি

মোঃ শাহাদাত হোসেন মনু,ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠীর রাজাপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ময়লা-আবর্জনায় ভাগারে পরিণত হয়েছে। উপজেলা শহরের কোথাও ডাস্টবিন না থাকায় যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ না থাকায় এর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে উপজেলা সদরের
বাসিন্দারা। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা অপসরণের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না করায় দুর্গন্ধে বাতাস দূষিত হচ্ছে।
এ ছাড়া কিছুদিন যাবৎ টানা বৃষ্টির পানিতে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা ভেসে যেখানে সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দুর্গন্ধে পথচারী, বসবাসরত আবাসিক এলাকার মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অফিসগামী মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, রাজাপুর উপজেলার সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের পাশে টিএন্ডটি অফিসের (পশ্চিম-দক্ষিণ) দুই পাশে, বাগরী বাজারের খালে, রাজাপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে সরকারি পুকুরের পাড়ে, বাজার ব্রিজ এর নিচে ও মন্দিরের পাশের খালে, বাইপাশ মোড়ে ও বাইপাশ খালে, ফায়ার সার্ভিসের উত্তর পাশে মহাসড়কের পাশে, পুরাতন জেলখানার পশ্চিম পাশে মহাসড়কের পাশে মেডিকেল মোড়েসহ সদরের মূল স্থানগুলোতে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে একাকার। উপজেলা শহরের কোথাও ময়লা ফেলার সুনির্দিষ্ট স্থান ও ডাস্টবিন না থাকায় শহরবাসী পলিথিনে
ভরে যেখানে সেখানে ফেলে রাখছেন ময়লা-আবর্জনা।
দিনের পর দিন জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে যেখানে সেখানে ছড়িয়ে পড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে এডিস মশা ও মাছির আবাসস্থল। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এ ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ের সংখ্যা। উপজেলা শহর জুড়েই ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। এছাড়াও বাগড়ী হাটের ময়লা, বাজারের ময়লা, হোটেল রেস্টুরেন্ট এর ময়লা, দধির হাঁড়ি, অগণিত পলিথিন সব খালে ও বিভিন্ন রাস্তার পাশে, ডোবায় ফেলা হচ্ছে, ফলে খালগুলি দ্রæত ভরে যাচ্ছে ও রাস্তায় চলাচল করতে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। উপজেলা শহরের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে ২টি পুকুরে পলিথিনসহ ময়লা-আবর্জনা
ফেলার কারণে পুকুর ২টি মাছ চাষের অনুপযোগী হয়ে গড়েছে।
উপজেলা সদরের বাসিন্দা মাহিন, সাইফুলসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, আবর্জনার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ। রাস্তা-ঘাটে যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ ও দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। উপজেলা শহরের কোথায়ও ময়লা ফেলার সুনির্দিষ্ট স্থান ও ডাস্টবিন না থাকায় বাধ্য হয়ে খোলা জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলছে এলাকাবাসী। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছে সাধারন পথচারীরা।
ব্যবসায়ি এম মুরাদ, নয়ন তালুকদার, আরিফ, মিজান, আমিনুলসহ একাধিক ব্যক্তি
বলেন, শহরের আবাসিক বসতবাড়ি, দোকান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কনফেকশনারি,
কয়েকটি ক্লিনিক, হাট বাজারের ইজারা এবং ট্রেড লাইসেন্স থেকে ইউনিয়ন পরিষদ
বছরে অনেক টাকা রাজস্ব নিলেও তাদের থেকে সেবা পাচ্ছেনা জনসাধারণ ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গুলো।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন তালুকদার বলেন, আমরা সবার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। সবাই একত্রে বসে আলোচনা করে খুব শীঘ্রই দুইজন লোক রেখে নির্দিষ্ট একটা স্থান ঠিক করবো এবং সেখানে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা হবে। এবিষয়ে “পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশের স্বপ্ন” বিডি ক্লিন এর ঝালকাঠি শাখার সদস্য রাহাত মাহমুদ জিবন বলেন, আমরা মানুষদের সচেতন করার জন্য বিভিন্ন সময় সচেতনতা মূলক লিফটে বিতরণ করেছি।
শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করেছি। তারপরও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। এরকম যদি যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলতে থাকে তাহলে পরিবেশ দূষণ হবে এবং পানি জমে এডিস মশা তৈরি হবে। এবিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ ঝালকাঠি শাখার প্রেসিডেন্ট এডভোকেট মোঃ আককাস সিকদার বলেন, ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ, ডাস্টবিন স্থাপন এবং ময়লা অপসারণের দাদায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের।
রাজাপুর উপজেলা সদরে উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদ মিলে ময়লা অপসারণ এবং
ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নিতে পারে। এবিষয়ে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ ফারহান তানভীর তানু বলেন, ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় যেখানে সেখানে ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে এবং পানি জমে এডিস মশা জন্ম নিচ্ছে। এতে উপজেলাবাসী ঝুঁকিতে আছে।
সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ৫৩ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, পৌরসভা না থাকায় সরকারি কোন কর্মচারী এবং সরকারি কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। তাই এই বিষয়ে উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদসহ সবার সাথে আলোচনা করবো। এবং স্থায়ী ভাবে সমাধানের জন্য চেষ্টা করবো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button