রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : রাঙ্গামাটিতে ঐতিহ্যবাহী বিজু বৈসু সাংগ্রাই সাংস্কৃতিক মেলা শুরু হয়েছে। সোমবার রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনিস্টিউট প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধন হয়। মেলার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার।
জানা যায়, এবার পাহাড়ীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হচ্ছে। আলাদা নামে হলেও চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ও মারমা জাতিগোষ্ঠী একযোগে এ উৎসব পালন করে। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরারা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই আর তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু নামে এ সামাজিক উৎসব পালন করে। তবে বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এ উৎসবকে বৈসাবি নামেই চেনে। উৎসবকে ঘিরে নানান আয়োজন শুরু হয়েছে পাহাড়ী গ্রামে। সপ্তাহ জুড়ে চলবে এ উৎসব।
মেলার ৩০টি স্টলে নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আলোকচিত্র ও ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও হস্তসামগ্রী প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে নানান সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
উৎসবকে স্বাগত জানিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ মাঠ থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনিষ্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। র্যালী শেষে অনুষ্ঠিত হয় আদিবাসীদের মনোজ্ঞ ডিসপ্লে।
১২ এপ্রিল উৎসবের প্রথম দিন চাকমা, ত্রিপুরা, তংচঙ্গ্যা জাতি ফুল বিজু বৈসু কিংবা বিষু। এ দিন নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। পরদিন ১৩ এপ্রিল চৈত্র-সংক্রান্তির দিনকে বলা হয় মুল বিজু বৈসু বা বিষু। এ দিন প্রতি ঘরে রান্না হবে ঐতিহ্যবাহী পাচন। ঘরে ঘরে চলে অতিথি আপ্যায়ন। ১৪ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলে মারমা ও রাখাইনদের ঐতিহ্যবাহী জলখেলি তথা পানি খেলা উৎসব। রাখাইন, মারমা তরুণ তরুণীরা জলখেলিতে অংশ নিয়ে উৎসবে মেতে উঠে।
করোনা মহামারির কারণে গত তিনটি বছর বৈসাবি উৎসবের আয়োজন ছিল সীমিত। এবার করোনামুক্ত পরিবেশে সামাজিক উৎসবকে কেন্দ্র করে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছে পাহাড়ের মানুষ। সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে রাঙ্গামাটিসহ পাহাড়ের সর্বত্র বিজু বৈসুক সাংগ্রাই উৎসব আনন্দঘন পরিবেশে পালিত হবে বলে আশা সকলের।