sliderরাজনীতিশিরোনাম

রনোর চোখে পৃথিবী দেখবেন দুইজন

পতাকা ডেস্ক: আজীবন মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে যাওয়া বামপন্থি নেতা হায়দার আকবর খান রনো মৃত্যুর আগেও ভেবেছেন মানুষের কথা। তার দান করে যাওয়া কর্নিয়ায় পৃথিবীর আলো দেখবেন দৃষ্টিহীন দুইজন মানুষ।

গত শুক্রবার গভীর রাতে রাজধানীর পাস্থপথের একটি হাসপাতালে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) উপদেষ্টার জীবনাবসান ঘটে। শনিবার দুপুর একটার দিকে সেখানে এসে তার কর্নিয়া নিয়ে যান স্বাস্থ্য খাতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানীর কর্মীরা।
সিবিপির নেত্রী জলি তালুকদার বলেন, ‘হায়দার আকবর খান রনো মরণোত্তর চক্ষুদান করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর আমরা সন্ধানীতে বিষয়টি জানাই।’

সন্ধানীর জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘তাদের তত্ত্বাবধানে আজ দুইজন দৃষ্টিহীনের চোখে অস্ত্রোপচার করে বসানো হবে এই কর্নিয়া।

কর্নিয়া দুটি এখন আই ব্যাংকে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা হবে। সবকিছু শেষ করে সার্জনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে, উনারা সেগুলো প্রতিস্থাপন করবেন।”

সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ও সন্ধানী আন্তর্জাতিক চক্ষু ব্যাংকের সভাপতি মনিলাল আইচ লিটু বলেন, সার্জন সৈয়দ এ হাসান কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করবেন।

বাংলাদেশের ১৪ লাখ দৃষ্টিহীন ব্যক্তির মধ্যে অন্তত ৫ লাখ কর্নিয়াজনিত সমস্যায় ভুগছেন। কর্নিয়া দানে অনীহার কারণে লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না।

মনিলাল আইচ বলেন, বাংলাদেশে এখন যে পরিমাণ কর্নিয়া পাওয়া যাচ্ছে তাতে এই পাঁচ লাখ অন্ধের চোখে আলো ফেরাতে হলে কয়েক হাজার বছর সময় লাগবে। এজন্য কর্নিয়া দান করতে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রথম পতাকার অন্যতম রূপকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশ তার কর্নিয়া দান করে গেছেন। তার দুটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে রংপুরের মশিউর রহমান এবং চাঁদপুরের আবুল কালামের চোখে।

সমাজসেবক সালেহা সুলতানার দুটি কর্নিয়া দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহের খোকন রবি দাস ও বগুড়ার তানিয়া আক্তারকে।

জনকণ্ঠের সম্পাদনা পরিষদের সহকারী হারুনুর রশিদের চোখে পৃথিবী দেখছেন কেরানীগঞ্জের মুকিম শেখ ও দাউদকান্দীর আরব আলী।

ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিনের চোখে পৃথিবীর আলো দেখছেন রেশমা। আর বাংলাদেশে প্রথম ক্যাডাভারিক অঙ্গদাতা সারাহ ইসলামের দুই চোখ দেওয়া হয়েছে ফেরদৌসী আক্তার ও সুজনকে।

কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রনোর নাম উঠল এখন এই তালিকায়। দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসতন্ত্রের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। গত ৬ মে পান্থপথের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button