sliderজাতীয়শিরোনাম

‘যুগ যুগ জিও তুমি মওলানা ভাসানী’

ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী

আগামীকাল রবিবার (১৭ নভেম্বর) আফ্রো-এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার ভুখা-নাঙ্গা গণমানুষের নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। আমৃত্যু নির্লোভ আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে টাঙ্গাইলের সন্তোষে তাকে সমাহিত করা হয়।

মজলুম জননেতার ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা ভাসানীর মাজারে শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে রবিবার ভোর থেকে ঢল নামবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের।
প্রয়াত এই নেতার মাজারে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। ক’দিন আগে থেকে মওলানা ভাসানীর ভক্ত, অনুসারী ও মুরিদানরা সন্তোষে এসে উপস্থিত হয়েছেন। ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইতোমধ্যে সন্তোষে ভাসানীর মাজার প্রাঙ্গণে মেলা বসেছে। এই মেলা কয়েকদিন ব্যাপী চলবে। বিভিন্ন সংগঠন-প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা, সেমিনার চলছে। মাজার প্রাঙ্গণে ভক্ত, অনুসারী ও মুরিদরা ‘যুগ যুগ জিও তুমি, মওলানা ভাসানী’ স্লোগানে ক্ষণে ক্ষণে আওয়াজ তুলছেন- এ আওয়াজ রবিবার আকাশচুম্বী হবে।

মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল চেগা মিয়া। তবে তিনি লাল মওলানা হিসেবেও সমধিক পরিচিত। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও তার জীবনের সিংহভাগই টাঙ্গাইলের সন্তোষে কাটিয়েছেন। সন্তোষের মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত।

মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনসহ সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে নানান আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।

তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন তৎকালীন রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। মওলানা ভাসানী পাক জান্তাদের ‘ওয়া আলাইকুম আসসালাম’ বলে বিদায় জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি- ফারাক্কা লং মার্চ। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। বঙ্গবন্ধুও তাকে পিতার মতো শ্রদ্ধা করতেন।

মওলানা ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, তবারক বিতরণ এবং মজার প্রাঙ্গণে কয়েকদিন ব্যাপী মেলা ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হবে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব কর্মসূচি পালন করবে।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর আনোয়ারুল আজীম আখন্দ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মওলানা ভাসানীর মাজারে সকালে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ক্যাম্পাসস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ থেকেও পুস্পস্তবক অর্পণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আগত অতিথিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, আলোচনা সভা সহ মৃত্যুবার্ষিকী পালনে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button