যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর

আফগানিস্তানে তালেবানদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে দুপক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কাতারের রাজধানী দোহায় শনিবার এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পাকিস্তান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ চুক্তির মাধ্যমে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সৈন্যবাহিনী তুলে নেয়ার পথ প্রশস্ত হলো।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে এ দু’পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে শনিবার সকালে তালেবান তাদের সকল যোদ্ধাদের যে কোনো ধরনের আক্রমণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ জারি করে।
মোহাম্মদ নাঈম নামে তালেবানদের একজন প্রতিনিধি দোহায় এ চুক্তিকে ‘সামনে এগিয়ে যাওয়ার’ একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি আলজাজিরাকে বলেন, ‘এ চুক্তির মাধ্যমে আফগান যুদ্ধের অবসান হতে যাচ্ছে।’
চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক মিনিট আগে এক যুক্ত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সরকার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে ১৪ মাসের মধ্যে প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
প্রায় ১৪ হাজার মার্কিন সৈন্য এবং ন্যাটো বাহিনীর ৩৯ মিত্র ও অংশীদার দেশের আনুমানিক ১৭ হাজার সৈন্য আফগানিস্তানে রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের ১৩৫ দিনের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে তাদের সৈন্য সংখ্যা ৮ হাজার ৬০০-তে নামিয়ে আনবে এবং অন্যান্য প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করবে।
বিবৃতিতে এও বলা হয় যে, আগামী মে মাসের ২৯ তারিখে আফগান সরকার জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলে তালেবান সদস্যদের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নেবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে ২০১৮ সালে এ আলোচনার শুরু হয়।
২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের পতন ঘটিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এ আলোচনায় আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার অংশ নিতে চাইলেও পশ্চিমা সমর্থনে গঠিত এ সরকারকে ‘পুতুল সরকার’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তালেবানরা তাদের সাথে বসতে অস্বীকৃতি জানায়।
তালেবান সরকারকে উৎখাত করা হলেও এখনো আফগানিস্তানের অনেক অঞ্চল তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
২০২০ সালের নির্বাচনে আবারো প্রার্থী হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের এ দীর্ঘতম যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্যই এ চুক্তির ব্যাপারে অগ্রগামী হয়েছেন। তাদের সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে নিতে চান তিনি।
দীর্ঘমেয়াদি এ যুদ্ধে ২০০৯ সালের পর থেকে আফগানিস্তানের এক লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন। এ সময় থেকে জাতিসঙ্ঘে সহযোগিতা মিশন এ মৃত্যুর হিসাব রাখতে শুরু করে।
সূত্র : আলজাজিরা