
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার যমুনা পাড়ে ১৫ কিলোমিটার অংশে দীর্ঘ দিন ধরে একটি চক্র বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। এ কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের স্বীকার হতে হয়েছে নদীর পাড়ের হাজারো মানুষকে। এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে শিবালয় উপজেলা প্রশাসান। এ অবৈধ বালু উত্তোলন ফেরাতে সাম্প্রতিক সময়ে ২৯টি অভিযান পরিচালনা করেছেন উপজেলা প্রশাসন।
এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে ১০ জনকে কারাদণ্ড, বিপুল ড্রেজার পাইপ ধ্বংস, ড্রেজার মেশিন জব্দসহ নিয়মিত মামলার পর বন্ধ হয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলন। এতে স্বস্তি ফিরেছে নদীর পাড়ের মানুষদের মাঝে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১০-১২ বছর ধরে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একটি চক্র পদ্মা-যমুনার শিবালয়ের অংশে বাংলা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে তা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছিল।
এছাড়া নদীর মাঝখান থেকে ড্রেজারের কাটার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের পর বাল্কহেডে করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছিল। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার এসব অবৈধ্য রমরমা বালু ব্যবসা চলছিল দিনের বেলাতেই। এতে নদীর পাড়ের মানুষের ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থান আর এগোতে পারিনি এ অবৈধ বালু উত্তোলন। গত কয়েক দিন আগে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার কারণে আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও দুইটি ড্রেজিংয়ের কাটার মেশিন জব্দ করার হয়।
প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে নদীর পাড়ে বাংলা ড্রেজার বসানোর সুযোগ পাচ্ছে না এসকল মাটি খেকোরা।
আলোকদিয়া চরের বাদিন্দা কয়েকজন জানান, প্রশাসনের অভিযানে নদী থেকে আপাতত ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা বন্ধ রয়েছে। এতে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে আমাদের মাঝে। তবে কতদিন এমন থাকে সেটাই দেখার বিষয়।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন জানান,শিবালয়ে পদ্মা-যমুনায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে প্রশাসন নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
এর মধ্যে প্রথমেই বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী অবৈধ বালু উত্তোলনের শাস্তি সম্পর্কে দফায় দফায় মাইকিং করে জনসাধারণকে অবগত করেছি।
পরবর্তীতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাধ্যমে গত কয়েক মাসে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অন্তত ২৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ১১ জনকে ৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা, ১০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সাথে ২৪টি ড্রেজার মেশিন ব্যবহারে অনুপযোগী করাসহ ২৭ হাজার ফুট পাইপ অকেজো করা হয়েছে।