মোহনপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দূর্নতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি বিচারের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মামলা তুলে নিতে বাদিকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের বহিস্কৃত প্রধান শফিকুল ইসলাম ও পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র আলাউদ্দিন আলো’র বিরুদ্ধে।
মামলার বাদিকে অপহরণের পর তার বড়ভাই ট্রাক ড্রাইভার মোঃ আঃ মজিজ (২৫) প্রামানিক এ সাংবাদিককে মুঠোফোনে ও মোহনপুর থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, মামলার বাদি আঃ আজিজ প্রামানিক (২৩) প্রায় বছর খানেক আগে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি নিজ নামে লিখে নিয়ে তা দিয়ে ব্যাংক লোন ও দূর্নিতি করায় রাজশাহী আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে আদালতে চলমান ও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম কেশরহাট পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের তালিকাভুক্ত সক্রিয় সদস্য।
বাদি আঃ আজিজ উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউপির বেলনা গ্রামের মোঃ কুরবান প্রামানিকের ছেলে।
৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে কেশরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আওয়ামিলীগ নেতা শফিকুল মামলার বাদিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলাটি উঠিয়ে নিতে কেশরহাট পৌর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক মেয়র আলাউদ্দিন আলো’র সরনাপন্ন হয়। আলো দলীয় সম্মানকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে বিষয়টি মিমাংসার উদ্দ্যেগ নেয়। এবিষয়ে কেশরহাট পৌর বিএনপি’র সভাপতি আলো তার লোকজনসহ কয়েকবার মামলাটি উঠিয়ে নিতে বাদিকে চাপ প্রয়োগ করে। তাতে কাজ না হলে গত দু’মাস আগে আলো কেশরহাট পৌর যুবদলের বহিস্কৃত সদস্য সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজনকে পাঠিয়ে বাদির বাড়িঘর ঘেরাও করান।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টার দিকে মামলার বাদি আঃ আজিজ কেশরহাটে বাজার করতে আসলে আলাউদ্দিন আলো তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয় এবং মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করে। এতে কাজ না হলে আলোর নির্দেশে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, পৌর যুবদলের বহিস্কৃত সদস্য সাদ্দাম হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম, সোহাগ হোসেনসহ ৫/৬ জন আজিজকে মারধোর করে দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, চাইনিজ, চাকু, বাঁশের লাঠি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে কেশরহাট থেকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে সিএনজি করে রাজশাহীর দিকে রওনা দেয়।
বাদি আঃ আজিজের ভাই আঃ মজিদ আরো জানান, তাকে রাজশাহী শহরের কোন এক অজ্ঞাত স্থানে আটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আগামীকাল ৫ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে মামলা প্রত্যাহার করার পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। তার ভাই আজিজের মোবাইল ফোনটি তারা কেড়ে নিয়েছে এবং বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তারা আমার ভাইকে জিম্মি করে রেখেছে। আমার ভাই বাড়িতে ফিরতে পারবে কি না তাও জানিনা। আমি খুলনাতে আছি সেকারনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছিনা। তবে আমার বোন মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে গেছে।
এবিষয়ে মোহনপুর থানা ভারপ্রাপ্ত ওসি আব্দুল হাননান বলেন, অপহরণের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আসামীদের রিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে কেশরহাটে পৌর বিএনপি সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র আলাউদ্দিন আলোর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখল বানিজ্য, সৈরাচারবিরোধী লোকজনকে নিরাপদে রাখার অভিযোগে জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের কাছে গত ৮ সেপ্টেম্বর ২৪ তারিখে লিখিত অভিযোগ করেন কেশরহাট পৌর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দরা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আলাউদ্দিন আলোকে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২৪ রাজশাহী জেলা বিএনপি সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার তাকে শোকজ নোটিশ দিলেও আলো ও কতিপয় নেতৃবৃন্দের থেমে নেই সংগঠন বিরোধী কার্যক্রম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেশরহাট পৌর বিএনপি’র একাধিক নেতা জানান, জেলা নেতৃবৃন্দ কেশরহাট পৌর বিএনপির সভাপতি ও তার সাথে আতাত করে চলা সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যদি এখনই সাংগঠনিক কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয় তাহলে অচিরেই কেশরহাট বিএনপি তার সাংগঠনিক ক্ষমতা হারাবে বলে মনে করেন নেতৃবৃন্দরা।