
বাবু ধন চাকমা,সাজেক: সাজেকবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত কর,ঠ্যাঙারে বাহিনী ভেঙে দাও! এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মো:নাঈম-এর খুনীদের আড়াল করতে ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে দেয়া মামলা প্রত্যাহার,প্রকৃত খুনী ও তাদের আশ্রয় দাতাদের গ্রেফতার এবং সাজেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের হয়রানি বন্ধের দাবিতে আজ ২১ জুন ২০২৪, শুক্রবার,দুপুর ১২টায়,সাজেক উজোবাজার পাশে গঙ্গারাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব নতুন জয় চাকমার সভাপতিত্বে,কমিটির সদস্য বাবু ধন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,৩৬নং সাজেক ইউনিয়নের মেম্বার দয়া ধন চাকমা, সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব নতুন জয় চাকমা।
সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন,গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম সাজেক থানা কমিটির সভাপতি নিউটন চাকমা, হিল উইম্যান্স ফেডারেশন,বাঘাইছড়ি উপজেলা কমিটির সভাপতি বিশাখা চাকমা।।
বক্তারা বলেন,তথাকথিত গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ নামধারী ঠ্যাঙারে বাহিনী সাজেক বাঘাইহাট বাজারে অবস্হান করে পুরো এলাকাজুড়ে একটি অস্হিতিশীল পরিস্হিতি সৃষ্টি করলে,ভুক্তভোগী জনতা সেনা আশ্রিত ঠ্যাঙারে বাহিনীদেরকে বাঘাইহাট থেকে বিতাড়িত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে লাঠি-মুগুর নিয়ে ধাওয়া করে। ধাওয়া করার এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতার উদ্ধেশ্য ভারী অস্ত্র দিয়ে গুলি চালালে,সেই গুলিদে নাঈম নামে একজন শান্তি গাড়ির হেল্পার হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্হায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রায় ১২/১৩জন আহত হন,তম্মধ্য দুইজন গুলিবিদ্ধ।
ঠ্যাঙারে বাহিনীর ভারী অস্ত্রের গুলিতে শান্তি গাড়ির হেল্পার নাইম গুলিবিদ্ধ অবস্হায় মৃত্যু হলেও,ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দসহ অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে নিহত মো: নাঈম -এর চাচা বাবুল হোসেনকে বাদী করে সাজেক থানায় একটি মিথ্যা মামলা করা হয়। যা অত্যন্ত দু:খজনক ও নিহত মো:নাঈম-এর প্রকৃত খুনীদের আড়াল করা ও ঠ্যাঙারে বাহিনীদের নিরাপদ আশ্রয় করিয়ে দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।।
সাজেক ইউপির ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার দয়া ধন চাকমা, খোভ প্রকাশ করে বলেন,সেনাবাহিনীরা নিজেরাই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের লালন পালন করেন, অপর দিকে সন্ত্রাসী খোঁজার নামে এলাকায় সেনা অভিযান করে শান্তিপূর্ণ সাধারণ লোকজনদের হয়রানি করেন। আমাদের মত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপড় নানা রকম ভয় ভীতি ও হুমকি দিয়ে অমানবিক মানষিক নির্যাতন করেন। ইতিমধ্য, সাজেক ইউনিয়নের গত দুই বছর আগে বাস্তবায়িত প্রকল্প জোনে জমা দেয়ার নির্দেশনাও দিয়ে এক ধরণের হুমকি দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান-মেম্বারদের হয়রানি মুলক কর্মকান্ড শুরু করেছেন। সেনাবাহিনীদের এই ধরণের অমানবিক কর্মকান্ডের জন্য আমরা তীব্র নিন্দা ও ঘৃনা জানায়।
সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব আজকের সমাবেশের সম্মানিত সভাপতি নতুন জয় চাকম বলেন,ঠ্যাঙারে বাহিনীরা সাজেক এলাকার মায়-মুরুব্বি ও স্হানীয় জনগণদের ফোন করে রীতিমত প্রানণাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। জনগণ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। জনগণের জানমাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করার জোড় আহবান জানাচ্ছি। একই সাথে জন নিরাপত্তা স্বার্থে ৫টি দাবি প্রশাসনের নিকট তুলে ধরছি।
১। শান্তি গাড়ির হেল্পার মো:নাঈম-হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত খুনীদের গ্রেফতার করতে হবে।
২। মো:নাঈম হত্যার সাথে জড়িত প্রকৃত খুনীদের রক্ষা করতে ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীদের আশ্রয় নিশ্চিত করতে ইউপিডিএফ নেতৃবৃন্দের নামে ও অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, সেই মিথ্যা মামলা আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্য প্রত্যাহার করতে হবে।
৩। সাজেক গণ অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য,ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি,স্হানীয় কারবারীমুরু্ব্বি ও সর্বস্তরের গণ মানুষের উপড় প্রতিনিয়ত যে প্রাননাশের হুমকি তা বন্ধ করে প্রত্যেকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য সমস্ত দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে।
৪। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হয়রানিমুলক কর্মকান্ড বন্ধ করে স্বাভাবিক ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যকলাপ পরিচালনার সুবন্দোবস্তু করতে হবে।
৫। ঠ্যাঙারে বাহিনীদের প্রশয়দানকারী সেনা জোন কমান্ডার লে:কর্ণেল মি:খাইরুল আমিন ও পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মদ:শিরিন আক্তারকে প্রত্যাহার করতে হবে।
৬। ঠ্যাঙারে বাহিনী ভেঙে দেয়া এবং সাজেক এলাকায় কোন প্রকার ঠ্যাঙারে বাহিনীদের নিয়ে আসা বন্ধ করতে হবে।
উপরোক্ত দাবী পুরন করা না হলে পর্যটন অবরোধ,সড়ক ও নৌপথ অবরোধ,অবস্হান ধর্মঘটসহ আরো কঠোর কর্মসুচী পালন করা হবে।