
ফ্যাসিবাদী শাসন ও সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৮ তারিখে পুলিশের ছোঁড়া গুলি ও টিয়ারশেলের আঘাতে অর্ধশতাধিক সাংবাদিক রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। অথচ একটি কুচক্রী মহল পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাকে আড়াল করার জন্য গোয়েবলসীয় কায়দায় মিথ্যাচার করছে। এসব মিথ্যা তথ্য প্রচারের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে এদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সোচ্চার হবার আহ্বান জানান তারা।
বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কদম পোয়ারা, তোপখানা রোড ও পুরানা পল্টন হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খানের উপস্থাপনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বিএফইউজের সাবেক সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, ডিইউজের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, সিনিয়র সাংবাদিক কায়কোবাদ মিলন ও আবুল কালাম মানিক, ডিইউজের সাবেক সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, ডিইউজের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু এবং বিএনপির মহাসমাবেশে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেট ও বেধড়ক পিটুনিতে আহত রাজু আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের ক্রিড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক রফিক লিটন, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য নিজাম উদ্দিন দরবেশ, আব্দুল্লাহ মজুমদার, তালুকদার রুমী, ফখরুল ইসলাম, মো: আবু হানিফ, সর্দার মতিন, আলম চৌধুরী, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ সাংবাদিক, গণতন্ত্র একসাথে চলতে পারে না। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। আর এখন ক্ষমতা এসে দিনকাল, আমার দেশ, দিগন্ত টিভিসহ অসংখ্য মিডিয়া বন্ধ করেছে। ২৮ অক্টোবর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনাকে সরকারের তাঁবেদার সাংবাদিকরা বলছে বিএনপি করেছে। অথচ পুরো ঘটনাটি ঘটেছে সরকারের নির্দেশে। কারণ, তারা গণতন্ত্র চায় না, সত্য ঘটনা প্রকাশিত হোক তা চায় না। জনগণের ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে না। তাই মানুষের অধিকার আদায় ও সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
এম এ আজিজ বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে বাসে আগুন দেয়, পুলিশ সেখানে চুপ থাকে। ২৮ তারিখে মেয়র তাপসসহ আওয়ামী লীগ নেতারা ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লাঠি তুলে দিয়েছিল বিরোধী নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করার জন্য। তিনি বলেন, সরকার হেফাজতের ওপর যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে ২৮ তারিখেও একইভাবে পুলিশের মাধ্যমে হামলা করেছে। এই অগণতান্ত্রিক সরকারকে বিদায় জানিয়ে সাংবাদিক ও দেশকে রক্ষা করতে হবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়া টিয়ারশেলে আহত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু এটা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার নোংরামিতে লিপ্ত কুচক্রীমহল। আজকে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসাথে চলতে পারে না। আজকে দেশের জনগণ দিশেহারা। তারা দুমুঠো ভাত ঠিক করে খেতে পারে না। আওয়ামী লীগ নেতারা কোটি কোটি টাকা লুট করে বড় বড় অট্টালিকায় আরাম করছে। আজকে দেশের মানুষ বাঁচতে চায়। আমাদের বাঁচতে হলে চূড়ান্ত লড়াই করে সরকারকে বিদায় করতে হবে। চূড়ান্ত লড়াইয়ের আন্দোলনে সকলকে শরিক হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম ২৮ তারিখের পুলি এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদে তাণ্ডবকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সরকারি এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য যে কুচক্রীমহল মিথ্যাচার করছে এর বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন চলবে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি