মানিকগঞ্জে সেতুর নিচে মিলল মরদেহ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত সেতুর নিচ থেকে কাশিমপুর (গাজীপুর) কেন্দ্রীয় কারাগারের হিসাব রক্ষক শহিদুল ইসলামের (৫৭) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ছয়টার দিকে লাশ মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর এলাকায় ধলেশ্বরী সেতুর পশ্চিম পাশে একটি পিলারের কাছে পড়েছিল। জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ধলেশ্বরী সেতুর পশ্চিম পাশের ৪নং পিলারের কাছ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শহিদুল ইসলাম গত রাতে তার কর্মস্থল থেকে মানিকগঞ্জের বাসার উদ্দেশ্যে বের হন। রাত ১১টার দিকে পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
পুলিশ জানায়, স্থানীয় একজন কৃষক সকাল ৮টার দিকে ধলেশ্বরী সেতুর পশ্চিম পাশের ৪নং পিলারের কাছে একটি অজ্ঞাত লাশ দেখতে পেয়ে গ্রামপুলিশকে জানান। পরে ওই গ্রামপুলিশ জরুরি সহায়তা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
শহিদুল ইসলামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার ভজনদাস গাতি এলাকায়। কাসিমপুরের আগে তিনি দীর্ঘদিন মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে কর্মরত ছিলেন। সে সুবাদে দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে মানিকগঞ্জের গঙ্গাধরপট্টি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি।
দেড় বছর আগে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে মানিকগঞ্জের ভাড়া বাসায় রেখে কাশিমপুর কারাগারে যোগদান করেন শহিদুল।
নিহতের মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহিয়া মালিহা বলেন, আমার বাবার সঙ্গে কারো শত্রুতা নেই। ঈদের ছুটিতে রোববার (১৬ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাবা মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে গাজীপুর থেকে রওনা দেন। সর্বশেষ রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা হয়। ওই সময় তিনি বলেন, বাসে করে মানিকগঞ্জ আসছেন। রাত ১২টার পর থেকেই বাবার ফোনটি বন্ধ পাচ্ছিলাম। রাতে বাবা আর বাসায় ফেরেননি। আজ সকালে মানিকগঞ্জ সদর থানায় বিষয়টি জানানো হয়। এমন সময় শুনতে পারি, জাগীর সেতুর নিচে কারো মরদেহ পাওয়া গেছে, পরে আমার মা (শামছুন্নাহার) ও ছোট বোনকে (মাইশা ফারহানা জেবা) নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, ওই লাশটি আমার বাবার।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল উদ্দিন বলেন, নিহত ব্যক্তির বড় মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন এবং ছোট মেয়ে পড়েন মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে। ছোট মেয়ে মানিকগঞ্জে পড়ালেখা করার কারণে পরিবার নিয়ে জেলা শহরের গঙ্গাধরপট্টি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। শহিদুল ইসলামের চোখ ও মুখে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরুল হাসান বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।