মুহাম্মদ আব্দুল জলীল, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের মাঠঘাট ইরি জমিতে এখন সরিষার মৌসুম। এই ব্যস্ত সময় কৃষক পার করছে। মৌ চাষীরা জেলার সাতটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭৫/৮০ মেট্রিক টন মধু সরিষার ফুল থেকে সংগ্রহ করার টার্গেট ধরা হয়েছে বলে জানা যায়। মধু আহরণ করতে পারলে প্রায় দুই কোটি টাকার মধু বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে ধারণা মৌ- চাষীদের। সাটুরিয়, হরিরামপু, ঘিওর, শিবালয়, দৌলতপুর, সিংগাইর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় পাঁচ শতাধিক মৌয়াল সরিষা ক্ষেতে কাঠের বানানো বাক্সে মৌমাছি পালন করছে।
মৌচাষীরা প্রতিদিন সকালে বাক্স থেকে মৌমাছি ছেড়ে দেয় এবং সন্ধ্যার সময় মধু আহরণ করে যার যার বাক্সে ফিরে আসে। এই মধু কুয়েত, মালয়েশিয়া, ভারত ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে এবং অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়ে দেশ সেবায় কাজ করছে।
মানিকগঞ্জে ৩৬ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। খুলনা, সাতক্ষিরা,সিরাজগঞ্জ নারায়ণগন্জ, পাবনা,গাজীপুর, যশোহর, ফরিদপুর থেকে মৌচাষীরা মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়এসে মধু সংগ্রহ করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সরিষার আবাদ বেশি। এই এলাকায় ইরি ক্ষেতের আবাদ বেশি। এই সব আবাদি জমিতে বর্যার পর সরিষার চাষ বেশি হয়। এছাড়া খেসারী ক্ষেতেও সরিষার চাষ দেখা যায়। মৌ চাষীরা কাঠের তৈরী বাক্স খেসারী ক্ষেতের আইলের পাশে বাক্স রেখেও মধু সংগ্রহ করে। সরিষা গাছের পাতা ও ফুল ঝরে পড়ে জৈব সার সৃষ্টি হয়। সেজন্য চাষীরা সরিষার আবাদ করে সারের চাহিদা কিছুটা হলেও মিটায়। বেশীর ভাগ মৌয়াল মৌ বাক্সের নিকট তাঁবু বানিয়ে রাত্রি যাপন করে থাকে। মাঘী সরিষার ক্ষেতে মৌ চাষ বেশি করতে দেখা যায়।
চলতি বছরে অনেক কৃষক সরিষার চাষ করেছে। মুধুর খুচরা বাজার মূল্য ৩০০/৩৫০ টাকা বিক্রি করে। কোম্পানীর নিকট তারা কম মূল্যে বিক্রি করে। মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায় চলতি মৌসুমে সরিষার ফুল থেকে প্রায় ৭৫/৮০ টন মধু সংগ্রহ করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফসলি জমিতে মধুর চাষ করলে সরিষা কোন ক্ষতি হয় না বরংচ লাভ হয়। গত বছর প্রায় ৬০ মেট্রিক টন মধু আহরণ করা হয়েছ। যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকার উপর। তবে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মানিকগঞ্জের মধু সংগ্রহেে লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করছেন।