এম এ কাইয়ুম চৌধুরী,শিবালয় প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের তিল্লি, চরতিল্লি ও পারতিল্লি এলাকায় মাঠের পর মাঠে হচ্ছে বেগুন চাষ। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় বাম্পার ফলন পাচ্ছেন কৃষকেরা। বাজারেও ভালো দাম পেয়ে এখন কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। তাই প্রতিনিয়তই বাড়ছে বেগুন চাষ।
স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলায় ১ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বলে আশা করছেন তারা। জেলার সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয় সাটুরিয়া উপজেলায়। এ উপজেলার সবজি চাষ হয়েছে ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। তবে ৪৩১ হেক্টর জমিতে শুধু বেগুন চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু তিল্লি ইউনিয়নে ৩৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বেগুন।
সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি এলাকার কৃষকেরা বলেন, ‘এলাকার অধিকাংশ কৃষক বেগুন চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় প্রতি বছর চাষের পরিমাণ বাড়ছে। তিল্লি এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ২২ হাজার কেজি বেগুন বিভিন্ন স্থানে যায়। ঢাকা, খুলনা ও বরিশালে সবচেয়ে বেশি যায় এ এলাকার বেগুন। খুচরা বাজারে বেগুনের দাম বেশি হলেও কৃষক প্রতি কেজি বেগুনে ২০-৩০ টাকা পাচ্ছেন।
’চরতিল্লি গ্রামের কৃষক ফরিদ হোসেন বলেন, ‘এ বছর ৩ বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পেরেছি। আশা করছি আরও ১ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারবো।’
পার তিল্লি গ্রামের কৃষক সোনামুদ্দিন বেপারী বলেন, ‘বাজারে সবজির দাম বেশি হলেও আমরা তেমন দাম পাই না। এখন আমরা প্রতি কেজি বেগুন ২০-৩০ টাকার বেশি পাই না। আমাদের হাত বদল হলেই বাজারে সবজির দাম দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে।’
তিল্লি এলাকার কৃষক রবিন হোসেন বলেন,‘আমাদের এলাকার চরতিল্লি আর পারতিল্লি গ্রামেই সবচেয়ে বেশি বেগুন চাষ হয়। প্রতিদিন শুধু চরতিল্লি বাজার থেকে প্রায় ২২ হাজার কেজি বেগুন বিভিন্ন জেলায় যায়। বাজারে সবজির দাম বেশি হলেও আমরা প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি করি ২০-৩০ টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন,‘গত বছর জেলায় ১ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছিল। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে বলে আশা করছি। এখনো কিছু জায়গায় নতুন করে চারা রোপণ হচ্ছে। পুরো জেলায়ই কিছু কিছু সবজি আবাদ হয়। তবে সদর, সিঙ্গাইর ও সাটুরিয়া উপজেলায় বেশি হয় বেগুন চাষ। প্রথমদিকে বৃষ্টিতে একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে কৃষি অফিসারদের পরামর্শে কৃষকদের পরিচর্যা ভালো ছিল। এখন ফলন মোটামুটি ভালই পাচ্ছেন। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ফলন বাড়বে। ঢাকার পাশের জেলা হওয়ায় কৃষক দামও ভালো পাচ্ছেন।’