sliderস্থানীয়

মানিকগঞ্জের তিন ভাষা সংগ্রামী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে স্মৃতিচারণ সভা অনুষ্ঠিত

মো. নজরুল ইসলাম : ”স্মৃতির মণিকোঠায় হে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান তোমাদের লাল সালাম” ভাষা স্বাধীনতা শিক্ষা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী ভাষা সংগ্রামী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড প্রমথ নাথ সরকার,কমরেড মিরান উদ্দিন মাস্টার ও কফিল উদ্দিন মাস্টার স্মরণে স্মৃতি ফাউন্ডেশন,গণচেতনা পরিষদ ও বারসিক মানিকগঞ্জের এই তিন মহামানিকদের নিয়ে মানিকগঞ্জ পূর্ব দাশরাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামাল সাহেবের বাসভবনে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করেন।
স্মৃতিচারণমূলক মতবিনিময় সভায় কমরেড ইকবাল হোসেন কচি’র সভাপতিত্ত্বে প্রধান আলোচক হিসেবে স্মৃতিচারণ করেন স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের প্রথম সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধকালীন মানিকগঞ্জ মহুকুমার বিএল এফ কমান্ডার মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামাল,স্মৃতিচারণমূলক আলোচনায় আরো অংশগ্রহন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. আজাহারুল ইসলাম আরজু, ৭১,র ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এ্যাড.দিপক কুমার ঘোষ, সিপিবি মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মজিবর রহমান মাস্টার, ক্ষেতমজুর সমিতি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড আব্দুল মান্নান, বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারি বিমল রায়, জাসদ জেলা কমিটির সম্পাদ মন্ডলীর সদস্য কমরেড ইকবাল হোসেন খান, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বিশিষ্ঠ ব্যাবসায়ী আসাদুল ইসলাম আসাদ, শিক্ষক নেতা মীর্জা ইস্কান্দার, সাংবদিক পারভেজ বাবুল,কৃষক সমিতি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সেতোয়ার হোসেন খান, উত্তরণ সাধারন সম্পাদক আমিনুর রহমান অঞ্জন, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.নজরুল ইসলাম সমাজ সেবক তাপস কমকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন- তিনজনেই পেশায় ছিলেন শিক্ষক নেশায় ছিলেন সমাজ পরিবর্তনের তথা বিপ্লবের সৈনিক। প্রমথ নাথ সরকার ২২ জানুয়ারী ১৯২২ সালে জেলার ঘিওর উপজেলার ভালকুটিয়া গ্রামে বৃটিশ আমলে জন্ম গ্রহন করে বৃটিশদের শাসন ও শোষন দেখেছেন তাখন থেকেই তিনি প্রতিবাদি ছিলেন, ভাষা আন্দোলন,মুক্তিযুদ্ধ তথা পাকিস্তান আমল ও বাংলাদেশের বৈষম্যভিত্তিক সমাজ ব্যাবস্থা দেখে ৯৪ বছর বয়সে ১৩ আগস্ট ২০১৬ সালে ইহধাম ত্যাগ করেন। রাজনীতিতে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। পার্টির নির্দেশে তিনি সমাজতন্ত্রের উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণে রাশিয়া ও রোমানিয়াতে গমন করেন। কমরেড মিরান উদ্দিন মাস্টার ২৮ আগষ্ট ১৯৩৪ সালে দৌলতপুরের কাকনা গ্রামে ৮ জুন ২০২০ সালে ৮৪ বছর বয়সে একই কাজ করে পরোলোগমন করেন। রাজনীতিতে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সদস্য ও কৃষক সমিতি জেলা কমিটির সাধারন সম্পাদক ছিলেন। কফিল উদ্দিন মাস্টার ১ ফ্রেব্রুয়ারী ১৯৩৭ সালে মানিকগঞ্জ সদরের বাহিরখোলাতে জন্মগ্রহন করে ১৯ জুলাই ২০২০ সালে প্রায় একই ধরনের কাজ করলেও রাজনীতিতে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী প্রগতিশীল আওয়ামী লীগের ধারার আওয়ামী লীগ যখন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ত্যাগ করে মোস্তাকের ধারায় ফিরে আসে তখন তিনি ড.কামাল হোসেন এর নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যোগদান করে এবং দীর্ঘদিন জেলার সভাপতি দায়িত্ব পালন করেন। প্রমথ নাথ সরকার মালুচি হাই স্কুল ও বরঙ্গাইল গোপাল চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ছিলেন, জীবনের মূলবান সময় দিয়ে স্কুল ও মানুষ গড়ার কাজে নিবেদন করেছেন নিজেকে। মিরান উদ্দিন মাস্টার তেরশ্রী হাই স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষক নিজ হাতে গড়েছেন কাকনা উচ্চ বিদ্যালয়, কফিল মাস্টার নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও জয়নগর উচ্চা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক ছিলেন।স্কুল গড়ার পাশাপশি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য গুণগ্রাহী ছাত্র। পারিবারিকভাবে ছিলেন জমিদার,মাস্টারি করে পয়সা বাড়িতে নিতেন না বেশিরভাগই ছাত্র ও সমাজের পেছনের ব্যয় করেও বেশ আনন্দ পেতেন। শেষ বয়সে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার স্মৃতি প্রদশনীতে করেছেন করেছে অক্লা পরিশ্রম রেখে গেছেন অনেক স্মৃতি।
বক্তারা মহান এই ব্যক্তিসহ আরো প্রগতিশীল ব্যক্তিদের নিয়ে সংকলন প্রকাশের প্রস্তাব করেন এবং তাদের নীতি আদর্শ নতুন প্রজন্মের মাঝে ছরিয়ে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button