sliderরাজনীতিশিরোনাম

‘মানবাধিকার ও মহিলা সংগঠনগুলোকে সোচ্চার হতে দেখি না’

আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘এখনতো মানবাধিকার ও মহিলা সংগঠনগুলোকে সোচ্চার হতে দেখি না। আজকে আমরা শুনি নুসরাতকে যারা লাঞ্ছিত করেছে তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা আছে। তাদের একজন নেতাকে বহিষ্কার এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল ওই আলোচনাসভার আয়োজন করে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘তাদের (নুসরাতের হত্যাকারী) সঙ্গে সখ্যতা ক্ষমতাসীন দলের। আমরা দাবি করব নুসরাতকে লাঞ্ছনাকারী সে যেই হোক না কেন,তাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু হবে কি না, জানি না।’
নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণা করে বের করেছে বিশ্বের যেসব স্বৈরাচারী দেশ আছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। যে দেশ উন্নয়নের কথা বলে, সেই দেশের রাজধানীকে চিহ্নিত করা হয়েছে দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর বলে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশটাকে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। যে দেশে ধনী দরিদ্র বৈষম্য থাকবে না, আমার মা বোনরা কারো দ্বারা লাঞ্ছিত হবে না। সে ধরনের একটি বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা লড়াই করেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘আজকে আবার আওয়ামী লীগ সমাজতন্ত্রকে সংবিধানে পুনর্বহাল করেছে। যদি তাই হয় তবে দেশে তো সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রচলিত হওয়ার কথা। কিন্তু আসলে আমরা কি করছি? বাংলাদেশের সবাই জানে এটা একটা মুক্তবাজারের দেশ। মুক্তবাজার অর্থনীতিকে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে এবং প্রেস কনফারেন্স করে সেটা জাতিকে জানিয়েছে তারা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করেন মুক্তবাজার অর্থনীতিতে আর সংবিধানে লেখা সমাজতন্ত্র এই যে দ্বিমুখী নীতি এটা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। এটা তো গ্রহণযোগ্য না।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘খালেদা জিয়া কোনো অপরাধ করেন নাই। তিনি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে এ কথা আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি এবং আদালতে যেসব সাক্ষী প্রমাণ, তা প্রমাণ করতে পারি। কিন্তু তাকে জেল দেওয়া তো বন্ধ করতে পারি না। কারণ, আজকে বিচার বিভাগ পর্যন্ত সরকার তাদের অধীনস্থ করে ফেলেছে। এটাই ফ্যাঁসিবাদের চরিত্র, তাই করে তারা। আজকে আমরা রাজনীতি করব বিএনপির, আমাদের প্রতিপক্ষ হবে আওয়ামী লীগ। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ না। আমার প্রতিপক্ষ হলো পুলিশ-র‍্যাব-বিজিবি। আমি যখনই একটা মিছিল মিটিং করতে গেলে আমার সামনে তো আওয়ামী লীগ দাঁড়ায় না। এই যে রাষ্ট্রকে বিরোধী রাজনীতির প্রতিপক্ষ বানানো এটাকেই বলে ফ্যাঁসিবাদ, এটাই হলো স্বৈরাচার।’
আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দীন খানের সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন সরদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মিয়া মো. আনোয়ার, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button