sliderস্থানীয়

মাদ্রাসার গাছ বিক্রির অভিযোগ প্রশাসনের বাধায় গাছ কাটা বন্ধ

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের বাইখির-বনচাকী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ চারজনের বিরুদ্ধে মূল্যবান ৮টি মেহগনি গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। কয়েক লক্ষ টাকায় বোয়ালমারীর এক গাছ ব্যবসায়ীর নিকট গাছগুলি বিক্রি করেন। ওই ব্যবসায়ী শুক্রবার গাছ কাটতে গেলে হেফজোখানা পরিচালনা কমিটির অন্য সদস্যগণ গাছ কাটতে বাধা দেন। তাঁদের বাধা অমান্য করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংম্লিষ্ট ইউনিয়নের তহশিলদারকে পাঠিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করান। এর আগেই দুটি গাছের ডালপালা ছেটে গোড়া কাটতে শুরু করেছিল। গাছ বিক্রি নিয়ে দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। ২০২১ সালে ফাজিল মাদ্রাসার একটি ঘরে হেফজোখানার উদ্বোধন করা হয়। স্থায়ীভাবে হেফজোখানার জন্য মাদ্রাসার পাশের একটি পুকুর হেফজোখানাকে দেয়া হয়। সেখানে একটি ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেই ভবনের নির্মাণ কাজ করার জন্য ওই পুকুরপাড়ের ৮টি মেহগনি গাছ দেড় লাখ টাকায় বিক্রয় করা হয় বলে জানা গেছে। হেফজোখানা পরিচালনা কমিটির নির্বাহী সদস্য ও ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এম এম জিয়াউল কাইয়ুম, সাধারন সম্পাদক আলমগীর হোসেন মোল্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রেজাউল করিম ও কোষাধ্যক্ষ হাফেজ হাসমত আলী মিলে গাছ বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই কমিটির সহসভাপতি মাওলানা মো. রুহুল আমীন যুক্তিবাদি, সহসভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিয়ার রহমান মিয়া, সহ সম্পাদক আব্দুর রব খান ও সহ কোষাধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন মিয়া।

গাছ কাটতে বাধা দেওয়ার পক্ষের সহসভাপতি মাওলানা মো. রুহুল আমীন যুক্তিবাদি, সহসভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিয়ার রহমান মিয়া, সহ সম্পাদক আব্দুর রব খান, সহকোষাধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন মিয়া, বাইখীর গ্রামের সাবেক ব্যাংকার আকবর মোল্যাসহ সবার অভিযোগ সরাসরি অধ্যক্ষ এম এম জিয়াউল কাইয়ুমের দিকে। তারা অভিযোগ করেন অর্থ লুটপাটের জন্যই গাছ কাটার আয়োজন করেন অধ্যক্ষ। আওয়ামী লীগের সময় মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তবিবুর রহমান মিন্টুর সাথে ২০ লাখ টাকার চুক্তি করে জিয়াউল কাইয়ুম অধ্যক্ষ পদে বসেন। সে সময় আওয়ামী লীগের লোকজনের ক্ষমতা দেখিয়ে তিনি মাদ্রাসায় ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি করেছেন। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, আমরা কমিটিতে রয়েছি কিন্তু কোন মিটিংয়ে আমাদের ডাকা হয়না।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য অধ্যক্ষ জিয়াউল কাইয়ুমকে ফোন করলে তিনি কিছু জানেননা বলে ফোন কেটে দেন। সাধারন সম্পাদক আলমগীর মোল্যা বলেন, হেফজোখানার ভবনের রড সিমেন্টে মরিচা পড়ে যাচ্ছে। তাই কাজ করার জন্য গাছ বিক্রি করেছিলাম। কোষাধ্যক্ষ ও হেফজোখানার মোহতামেম হাফেজ হাসমত আলী বলেন, আমি চাকরি করি। বাচ্চাদের পড়াই, বেতন নেই। কোন ঝামেলার মধ্যে নেই। সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রেজাউল করিম বলেন, একটা ভালো কাজের জন্য গাছ বিক্রি করেছিলাম কিন্তু তা আর হলোনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কথা মতো মিলেমিশে একসাথে কাজ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু উনারা তাতে সম্মত না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, গাছ কাটার খবর পেয়ে ইউনিয়নের তহশিলদারকে পাঠিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করি। পরে দুই পক্ষই আমার নিকট এসেছিলো। বলেছি হেফজোখানার কমিটি বসে রেজুলেশন করে মাদ্রাসা কমিটির অনুমোদন নিয়ে গাছ বিক্রি করতে পারেন।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button