বিবিধশিরোনাম

মাঘের শীতে বাঘের কাঁপুনির বদলে বইছে উষ্ণ হাওয়া

পাল্টে যাচ্ছে প্রকৃতি, এই মাঘে তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে । মাঘের শীতে বাঘের কাঁপুনির বদলে বইছে উষ্ণ হাওয়া। রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ জায়গা থেকে মধ্যমাঘে বিদায় নিয়েছে শীত।
সাধারণত মাঘ মাসে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করে থাকে। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে ২২ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। শীতের সেই আমেজ এবার একেবারেই নেই। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বয়ে গেছে সর্বশেষ মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এরপর প্রায় একমাস কোথাও শৈত্যপ্রবাহের দেখা মিলেনি। চলতি সপ্তাহে দেশের বেশিরভাগ স্থানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এরই মধ্যে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। এবারের মাঘ মাসে এখন পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে অচল হয়নি দেশ। কুয়াশার বাধায় নৌচলাচল বন্ধ হয়নি। কুয়াশার কারণে এক দিনের জন্যও আকাশপথে ফ্লাইট শিডিউলে বিপর্যয় ঘটেনি।
মাঘ মাসে শীত নেই, প্রকৃতির এমন আচরণ আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে। তাঁদের মতে, এ সময়ে আবহাওয়া এমনটি থাকার কথা নয়। পুরো শীত মৌসুমে প্রকৃতির বিপরীত আচরণ লক্ষ করা গেছে। বায়ুর আচরণে পরিবর্তন ঘটেছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শীতকালে উত্তর গোলার্ধ থেকে যে সাইবেরিয়ান শীতল বায়ু উত্তর থেকে দক্ষিণে যায় তা ভারি বায়ু। এই ভারি বায়ু মৌসুমী বায়ু প্রবাহকে সাগরের দিকে ঠেলে দেয়। সমুদ্রের বাষ্পিভূত মেঘ নিয়ে বায়ু উত্তর থেকে হিমালয়ের স্পর্শে শীতল বায়ু হয়ে দক্ষিণের দিকে যায়। জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের পালায় পুরো প্রক্রিয়ার দারুণ ব্যাঘাত ঘটেছে। যে কারণে কোন ঋতুই এখন ঠিকভাবে থাকতে পারছে না। এবারের শীত মৌসুমেও মাঘ আর সেই অবস্থায় নেই। মাঘে বইছে ফাগুনে হাওয়া।
আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, উচ্চ চাপবলয়ের কারণে এ দেশে পৌষ ও মাঘ মাসে শীত পড়ে থাকে। বিশেষ করে মাঘ মাস বা জানুয়ারি মাসে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। কিন্তু এবার তেমনটি ঘটেনি। শীত না পড়ার আরেকটি কারণ হলো পুরো শীত মৌসুমে পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব পড়েনি।
তিনি জানান, রাজধানীতে এবার আর শীত না আসার সম্ভাবনাই বেশি। দেশের কোথাও না কোথাও বিশেষ করে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে হালকা বৃষ্টির পর তাপমাত্র কিছুটা কমতে পারে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবাহওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আংশিক মেঘলা আকাশসহ দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সময়ে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দেশের অন্যত্র তা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।পূর্বপশ্চিম

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button