মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশেই তৈরি হয়েছে ময়লার ভাগাড়। জেলা শহরের সব ময়লা-আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে মহাসড়কের পাশেই। দুর্গন্ধে যানবাহনের চালক-যাত্রীসহ পথচারীরা রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড পার হলেই মুলজান এলাকায় দেখা মেলে এ ময়লার ভাগাড়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই এলাকা পার হওয়া সময় পরিবহনের যাত্রীরা নাকমুখ চেপে রাখেন। ময়লার স্তূপ পেরিয়ে গেলেও দুর্গন্ধ আটকে থাকে বাসের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী, বাসের চালকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
মানিকগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০ টন বর্জ্য বের হয়। এই বর্জ্য ফেলার জন্য পৌরসভার নিজস্ব জমি থাকলেও ভাগাড় বা ডাম্পিং স্টেশন নেই। ফলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের দিঘি ইউনিয়নের মুলজান এলাকায় ময়লা ফেলার সিদ্ধান্ত হয়।
স্থানীয়রা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এখানে থাকা দায়। নাক-মুখ চেপে চলাচল করতে হয়। আমাদের দাবি, ময়লার ভাগাড়টি এখান থেকে অন্য স্থানে সরিয়ে নিন।
বাসচালক সাগর হোসেন বলেন, এ এলাকায় এলেই গাড়িতে দুর্গন্ধ ঢুকে যায়। অনেক সময় যাত্রীরা বমি করে ফেলে। আমি নিজেও এখানে এলেই দম নেওয়া বন্ধ রেখে গাড়ি চালাই।
মুলজান এলাকার বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধে মাঝে মধ্যে মনে হয় বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাই। আমাদের বাড়িতে থাকা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা একটা অভিশাপ আমাদের জন্য। এই অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই।
মানিকগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইউসুফ আলী বলেন, খোলা পরিবেশে এভাবে ময়লা না ফেলে দেওয়াল করে ময়লা আলাদা করে তারপর একটা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এটা ময়মনসিংহে আছে মানিকগঞ্জে নেই। আমি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মানিকগঞ্জ পৌরসভাকে একাধিক চিঠি দিয়েছি। তারপরও তারা ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মকছেদুল মোমিন বলেন, ময়লায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও রোগ জীবাণু জন্মাতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া থেকে মানুষের ফুসফুসে রোগ হতে পারে। সবচেয়ে বেশি শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়া আশপাশের মানুষ দুর্গন্ধের কারণে মানসিক অস্বস্তি বোধ করতে পারে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন বলেন, আমি নিজেও দেখেছি ময়লা স্তূপে পরিণত হয়েছে মহাসড়কের পাশে। এ বিষয়ে পৌরসভার প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবো।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক সানজিদা জিয়াসমিন বলেন, ওইখানে পৌরসভার কিছু জায়গা কেনা আছে। আরও কিছু জায়গা কেনার প্রক্রিয়া চলমান। বলা আছে, যাতে পৌরসভার জায়গায় ময়লা ফেলা হয়। আমরা একটা প্রকল্পের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।