sliderস্থানীয়

মধুপুরে পরিচিতরাই একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তানকে পূর্ব কোনো আক্রোশে তাদের পরিচিতরাই পরিকল্পিতভাবে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কুড়ালটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে।
ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার রাতে নিজ এলাকায় পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় নিহতদের লাশ দাফন করা হয়েছে। পুলিশের একাধিক সংস্থা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই হত্যারহস্য উন্মোচন হবে।
শুক্রবার সকালে মধুপুর পৌর এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ রোডের মাস্টারপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের দুই সন্তানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন, মো: আব্দুল গণি মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী কাজিরন ওরফে বুচি (৩৭), তাদের ছেলে তাজেল (১৭) ও মেয়ে সাদিয়া (৮)। গণি মিয়া পুরাতন বাইসাইকেলের ব্যবসা করতেন। আর ছেলে তাজেল কলেজ শিক্ষার্থী।
পুলিশ জানায়, নিহতদের সুরতহালে দেখা যায় চারজনেরই মাথায় এবং গলায় কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নিহত গণি মিয়ার বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদি হয়ে মধুপুর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মধুপুর থানার ওসি তারিক কামাল নয়া দিগন্তকে বলেন, দুর্বৃত্তরা হত্যার উদ্যেশেই এ তাদেরকে গলায় মাথায় কোপায়। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে একাধিক ব্যক্তি এর সাথে জড়িত। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করছি দ্রুতই রহস্য উন্মোচন হবে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গণি মিয়ার তিন শ্যালককে থানায় আনা হয়েছে। তারা হলেন মধুপুর পৌরসভার মাস্টারবাড়ি এলাকার আবু তাহেরের ছেলে জামাল (৩৫), সালাম (২৭) ও সাইফুল (২৩)। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত সেই কুড়ালটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘরে থেকে কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। তছনছ করা হয়নি কোনো আসবাবপত্র। হত্যার নৃশংশতা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর একাধিক সংস্থার ধারণা পূর্ব কোনো আক্রোশ থেকেই পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তবে কয়েকটি সন্দেহকে সামনে রেখে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান মধুপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কামরান হোসেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, লাশে কুড়ালের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনটি রুম থেকে আমরা চারটি লাশ পেয়েছি। আর অন্য একটি রুমে একটা কুড়াল পেয়েছি। কেউ জানতো না এখানে এরকম ঘটনা ঘটেছে। যখন আত্মীয়রা তাদের খুঁজে পাচ্ছিলো না, তখন তারা তালা ভেঙে ঢুকে দেখে এই অবস্থা। দ্রুতই এ হত্যারহস্য উৎঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নিহত গণি মিয়া উপজেলার গোলাবাড়ী গ্রাম থেকে এসে মধুপুর পৌর এলাকার মাস্টারপাড়ায় জায়গা-জমি কিনে নতুন বাসা করে বসতি স্থাপন করেন। ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার রাতে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় গোলাবাড়ী স্থানীয় গোরস্থানে নিহতদের লাশ দাফন করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button