ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: মওলানা ভাসানীই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন মন্তব্য করে মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ‘১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে ‘আসসালামু ওয়ালাইকুম’ বলার মধ্য দিয়ে ভাসানীই প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে মওলানা ভাসানী যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি।’
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ভাসানী চর্চা কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আয়োজিত মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতে রাষ্ট্রীয় অতিথির অন্তরালে থাকায় তিনি তার ইচ্ছানুযায়ী মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখতে পারেননি। সেজন্য তার মধ্যে আজীবনই দুঃখবোধ কাজ করেছে। যুদ্ধ চলাকালীন তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় ভাসানী ঠিকই বুঝেছিলেন। এ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হবে ঠিকই কিন্তু মানুষের মুক্তি আসবে না। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও এ দেশের মানুষের মুক্তি আসেনি দেশীয় এবং সাম্রাজ্যবাদী শোষণ থেকে। ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মওলানা ভাসানী আজও বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক।’
ভাসানী চর্চা কেন্দ্র, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংগঠক অ্যাডভোকেট আবদুন নূরের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো: জামাল।
ভাসানী চর্চা কেন্দ্রের অন্য সংগঠক অ্যাডভোকেট মো: নাসিরের সঞ্চালনায় আরো আলোচনা করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর অমৃত লাল সাহা, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাসদের জেলার সরাইল উপজেলার সভাপতি অধ্যাপক জাফর আহমেদ আকসির, জেলা এনডিএফ নেতা ইয়াকুব আলী, জেলা বিপ্লবী কমিউিনিষ্ট লীগ নেতা পবিত্র দাস, জেলা ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘ভাসানী আজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মুক্তির জন্য। এ লড়াই এখনো চলছে। এ লড়াইকে যৌক্তিক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে হলে অবশ্যই ভাসানী অনুসারীসহ বাম প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবব্ধ হয়ে লড়াই সংগ্রাম সংগঠিত করতে হবে। এর কোন বিকল্প নাই।’
সভায় সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বক্তারা আরো বলেন, ‘মানুষ যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গণঅভ্যূত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে তেমন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না।’