মোঃ লিটন উজ্জামান,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় সাব রেজিস্টার অফিসে কর্মরত নকল নবিশদের কলম বিরতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জমির নকল দলিল তুলতে আসা সাধারণ জনগণ।
সারাদেশের ৫১৬টি সাব রেজিস্ট্রার অফিসে কর্মরত প্রায় ২০ হাজার নকল নবিশরা চলতি বছরের গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে এই কলম বিরতি করে আসছে। ভেড়ামারা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে নকল নবিশদের সংখ্যা প্রায় ১৫ জন। তারাও বিগত দুই মাস ধরে এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তাদের কলম বিরতির কারণে ভেড়ামারা সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে বিগত দুই মাসে কোন রকমের নকল দলিল বের হয়নি।
নকল দলিল তুলতে আসা ভেড়ামারার বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, আমি ১ মাস আগে জরুরী কাজে নকল দলিল তুলতে দিয়েছি। এখন পর্যন্ত পায়নি। এটা আমার জন্য খুবই প্রয়োজন।
রনি নামের একজন ব্যবসায়ী বলে, আমি নকল দলিল তুলতে দিয়েছি ব্যাংকে সিসি করব বলে। নকল দলিলের কারণে আমার ব্যাংকের সমস্ত কাজকর্ম আটকে রয়েছে। এভাবে চলতে পারেনা, এর একটা সুরাহা দরকার।
ভেড়ামারা সাব-রেজিস্টার অফিস সূত্রে জানা গেছে, নকল নবিশরা সাব রেজিস্ট্রিার অফিসের মূল দলিলের সার্টিফাইট কপি অর্থাৎ নকল কপি করে থাকে। মূল দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পরে তারা এই দলিল গুলো সরকারি বালামে রেকর্ডভুক্ত করে।
ভেড়ামারা অফিসের নকল নবিশদের প্রধান মান্নান বলেন,রেজিস্টিকৃত দলিলের প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য ৬০ টাকা করে সরকারি ফি জমা হয়। এরমধ্যে সাব রেজিস্টার তাদেরকে এই ফামন্ড থেকে প্রতি পৃষ্ঠা সরকারি বালামে উঠানোর জন্য ২৪ টাকা করে দিয়ে থাকেন। আর মূল দলিল থেকে অথবা বালাম বই থেকে নকল দলিল করার জন্য প্রতি পৃষ্ঠা বাবদ ৩৬ টাকা করে দেন। বাদবাকি টাকা সোনালী ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে সরকারি খাতে জমা করে থাকে।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন নকল নবিশকে মাসে সর্বনিম্ন ৩০০ পৃষ্ঠা লিখতে হবে। এক্ষেত্রে নকল নবিশরা ৩০০ পৃষ্ঠার মধ্যে যে যত বেশি লিখবে সে অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাবে।
আন্দোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনগণের ভোগান্তি হচ্ছে এটা আমরা জানি। তারপরেও কেন্দ্রীয় আন্দোলন যেহেতু সেখানে থেকেই নির্দেশনা আসবে।
ভেড়ামারা সাব রেজিষ্টার কাওসার আলী জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই নকল নবিশদের চাকুরী স্থায়ীকরণের দাবীতে সারা দেশের ন্যায় ভেড়ামারাতেও আন্দোলন চলছে। এই সময়ের মধ্যে কোন নকল দলিল সরবরাহ করা হয় নায়।