ভারতে ধর্ষণকারী সন্দেহে ছেলেকে পুলিশে দিল মা
ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় মেঘালয় রাজ্যে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যায় অভিযুক্ত পুত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ওই অভিযুক্তর মা নিজেই।
প্রতিবেশী কিশোরীটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই ছেলের আচরণ অস্বাভাবিক লেগেছিল মায়ের, কিন্তু যখন জানা যায় মৃত্যু হয়েছে তার, মায়ের কাছে নিজের অপরাধ কবুল করে ২২ বছরের ওই যুবক।
এরপর মা দিলেত সিয়েমলিয়েহ আর দেরি না করে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করে ছেলেকে গ্রেপ্তারের আর্জি জানান।
রাজধানী শিলংয়ের পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট ভিভেক সিয়াম বলছেন, “ওই কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের দায়ে ভিকি সিয়েমলিয়েহকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়েছি আমরা। তার বয়ানের ফলে ওই কিশোরীর কাকা, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে, তাঁকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ বলছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই আপার শিলং এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
ওই খবর এলাকায় জানাজানি হওয়ার পরে যখন ভিকি বাড়ি ফেরে, তখনই তার আচরণ দেখে সন্দেহ হয় মায়ের। ওই কিশোরীটিকে কাছের একটি জঙ্গল থেকে প্রায় মাঝ রাতে খুঁজে পাওয়া যায়।
সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ডাক্তাররা।
কিশোরীর যে কাকা পিরশান খারিম্বা প্রথম তাকে জঙ্গলে আবিষ্কার করেন, তার ওপরেই সন্দেহ হয় পুলিশের।
তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়। তবে কিশোরীর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই ভিকি তার মায়ের কাছে ভেঙে পড়ে। সে জানায় যে ওই অপরাধে সে-ও জড়িত ছিল।
মা আর দেরি না করে থানায় খবর দেন। তবে ভিকির বয়ান অনুযায়ী তার আরও যে তিন সঙ্গী ওই ধর্ষণ আর খুনে জড়িত ছিল, তাদের পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারে নি।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো বলছে, দিলেত সিয়েমলিয়েহ খুবই গরীব একজন নারী। নিজের ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও তার জামিনের ব্যবস্থা হয়ত তিনি করতে পারবে না। অথচ চাইলেই দিলেত সিয়েমলিয়েহ নিজের ছেলেকে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে পারতেন। কারণ ওই পরিবারটি খাসি উপজাতীয়, যে সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। মায়েরা নিজেদের সন্তানদের আড়াল করার জন্য সামাজিকভাবেও যথেষ্ট ক্ষমতাশালী। তা সত্ত্বেও নিজের ছেলের কুকর্মকে আড়াল করতে চান নি দিলেত। বিবিসি