দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে একতরফাভাবে ম্যাচ জিতে নিলো ভারত। ব্যাটিংয়ে তো পাকিস্তান দাঁড়াতেই পারেনি। আর বোলিংয়ের সময় মোহাম্মদ আমিরের সুবাদে ম্যাচে সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারলেও শেষটা ভালো হয়নি। ম্যাচ হেরেছে ৫ উইকেটে।
শনিবার সন্ধ্যায় মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিংয়ে এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১৭.৩ ওভারে মাত্র ৮৩ রানেই গুটিয়ে গেছে পাকিস্তানের ইনিংস। প্রথমে ব্যাট করে এটাই পাকিস্তানের সর্বনিম্ন স্কোর। জবাব দিতে নেমে মোহাম্মদ আমিরের বোলিং তোপে পড়েছিল ভারতও। মাত্র ৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বসে তারা। এরপর অবশ্য বিরাট কোহলি ও যুবরাজ সিংয়ের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে বিপদ কেটে যায়। তারা ৬৮ রান তুলেন। জয় থেকে সামান্য দূরে দলকে রেখে ব্যক্তিগত ৪৯ রানে আউট হয়ে যান কোহলি। মোহাম্মদ সামি তিন বলের ব্যবধানে কোহলি ও পান্ডিয়াকে আউট করে পাকিস্তানের হারের ব্যবধান কিছুটা কমালেও ভারতের জয় পেতে তেমন সমস্যা হয়নি। যুবরাজ সিং ৩২ বল খেলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। আর বাউন্ডারি মেরে দলের জয় নিশ্চিত করা ধোনি অজেয় থাকেন ৭ রানে। ১৫.৩ ওভারে ৮৫ রান তুলে নেয় ভারত।
মাত্র ৮৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামেন ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং আজিঙ্কা রাহানে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই এলবির ফাঁদে ফেলে রোহিতকে ফেরান মোহাম্মদ আমির। কোনো রান স্কোরবোর্ডে না উঠতেই উইকেট হারায় ভারত। একই ওভারে এলবির ফাঁদে ফেলে রাহানেকেও বিদায় করেন আমির। আজিঙ্কা রাহানে আর রোহিত শর্মার পর ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আমিরের আঘাতে ফেরেন সুরেশ রায়না। ওয়াহাব রিয়াজের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেওয়ার আগে এ বামহাতি ব্যাটসম্যান করেন এক রান। টানা বল করে নিজের কোটার ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৮ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ আমির।
এর আগে টস হারার পর পাকিস্তান অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি বলেছিলেন, টস জিতলে ব্যাটিংই করতেন তারা। মনে হয়েছিল তার কথাই ঠিক। ম্যাচের দ্বিতীয় বলে আশিস নেহরাকে দারুণ এক স্কয়ার ড্রাইভে চার মেরে শুরু করেছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। কিন্তু পরের বল থেকেই সব বদলে যায়। এক বল পরই শোধ তুলে নেন নেহরা। বাড়তি লাফানো ডেলিভারিতে কটবিহাইন্ড হাফিজ (৪)।
এরপর দুই ওভারের ‘বিরতি’, পাল্টা আক্রমণের ইঙ্গিতও দিতে শুরু করেছিলেন শারজিল খান ও খুররম মনজুর। চতুর্থ ওভার থেকেই শুরু পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল।জাসপ্রিত বুমরাহর বলে স্লিপে ধরা পড়েন শারজিল (৭)।
শোয়েব মালিকের সঙ্গে হাস্যকর ভুল বোঝাবুঝি আর বিরাট কোহলির সরাসরি থ্রোতে রান আউট মনজুর (১০)।
হার্দিক পান্ডিয়ার অনেক বাইরের বল তাড়া করে আউট অভিজ্ঞ মালিক (৪)।
পেস-উৎসবের মাঝেই হুট করে যুবরাজ সিংয়ের হাতে বল তুলে দেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথম বলেই স্কিড করে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে লাইন মিস করে এলবিডব্লিউ উমর আকমল (৪)।
পাকিস্তানের রান তখন ৫ উইকেটে ৩৫।
রবীন্দ্র জাদেজার গুলির বেগে থ্রোতে আফ্রিদি রান আউট হলে স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৪২! বিপর্যয়ে যা একটু লড়ছিলেন সরফরাজ আহমেদ। ২৫ রান করে এই উইকেটকিপারও আউট জাদেজার বলে বাজে এক শটে। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে পান্ডিয়া মুড়িয়ে দেন লেজ। ৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার নবীন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারই। ১১ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। নেহরা, বুমরাহ ও যুবরাজ একটি করে। সুত্রঃ বাংলাদেশের খেলা