sliderবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিশিরোনাম

ভারতের চেয়ে ৪ গুণ বেশি হওয়ার পরও বাড়ছে ইন্টারনেটের দাম!

বাংলাদেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়েছে বলে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি মে মাসের মাঝামাঝি জানিয়েছে। এর মধ্যে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন প্রায় সাড়ে ৯ কোটি।
দেশে সীমিত সংখ্যক অপারেটর থাকায় অনেকটাই জিম্মি হয়ে পড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। ফলে দেশে মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত ইন্টারনেটের মূল্য কমছে না। এর ওপর ২০২০-২১ অর্থবছরে মোবাইল সেবায় সম্পূরক কর ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশের চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যাও দেশের মোট জনসংখ্যার কাছাকাছি গিয়ে সাড়ে ১৬ কোটি ছাড়িয়েছে।
গত ১৪ মে বিটিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ১০ কোটি ৩২ লাখ ৫৩ হাজারে উন্নীত হয়েছে। ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ৯ কোটি ৫১ লাখ ৬৮ হাজার গ্রাহক।
বর্তমানে বাংলাদেশে এক জিবি ইন্টারনেটের গড় মূল্য ভারতের প্রায় চারগুণ। কেবল.কো.ইউকের ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড মোবাইল ডেটা প্রাইসিং: দ্য কস্ট অব ওয়ান জিবি অব মোবাইল ডেটা ইন ২৩০ কান্ট্রিজ’ শীর্ষক বিশ্লেষণে ফেব্রুয়ারিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদানকারী এ প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ২৩০টি দেশের ছয় হাজার ৩১৩টি এক জিবি মোবাইল ডেটা প্ল্যান যাচাই-বাছাই করে এ বিশ্লেষণটি প্রণয়ন করে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের প্রায় একই সময়ের ডেটা প্ল্যানের মূল্য বিবেচনা করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, বর্তমানে বিশ্বে এক জিবি মোবাইল ডেটার সর্বনিম্ন মূল্য ভারতে। দেশটিতে এক জিবি ডেটা কিনতে গ্রাহকদের গড়ে ব্যয় হয় ২১ টাকা ৯২ পয়সা। আর বাংলাদেশে এক জিবি মোবাইল ডেটার গড় মূল্য ৮৩ টাকা ৪৫ পয়সা। আর এক জিবি ডেটার মূল্য বিবেচনায় বিশ্বে বর্তমানে ১৩তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইল সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে মোবাইল ফোনে কথা বলা, এসএমএস পাঠানো এবং ডেটা ব্যবহারের খরচ ৫ শতাংশ বেড়ে যাবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়ানোর সমালোচনা করেছেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম।
সংসদে বাজেট পেশের পরদিন শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে তিনি লেখেন, ‘করোনার সময় মোবাইলে কথা বলা, ভিডিও কল-এ কাজ করা- এখন যেমন সোশ্যাল ডিসটেন্সিংয়ে পরোক্ষভাবে অত্যন্ত কার্যকর, তেমনি মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন দেশ ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজের সাথে, স্বজনদের সাথে সংযুক্ত থাকতে উৎসাহিত করছে জনগণকে।’
তিনি বলেন, ‘বুঝলাম না টেলিকম সার্ভিসকে করোনাকালীন অপরিহার্য সেবা বলা হলো, আবার ১০০ টাকা রিচার্জ করলে বাজেটে আগের ২১ টাকার বদলে এখন কেন ২৫ টাকা করা হলো (হিসাব তাই বলে)। বর্তমান মন্ত্রী জনাব মোস্তফা জব্বারের প্রতি বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয়কে অনুরোধ করার অনুরোধ রইল।’
তারানা হালিম লেখেন, ‘উল্লেখ্য যে, আমি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন কলরেট বৃদ্ধিসহ গ্রাহকদের ওপর চাপ পড়ে এমন কোনো কিছুর সাথে একমত হইনি। কারণ মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ভয়েজ ও ডাটা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে মানুষকে আরও উৎসাহিত করার পূর্বশর্ত সাশ্রয়ী মূল্য। বিশেষ করে স্টুডেন্টদের জন্য।’ সুত্র : দেশ রূপান্তর

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button