sliderস্থানীয়

ভবদহের জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত মানুষের চাপা কান্না

স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ যশোর জেলার সদর,অভয়নগর, মনিরামপুর,কেশবপুর উপজেলার নদ-নদী-খাল-বিলের নাব্যতা নষ্ট হওয়ায় অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী কালিশাকুলে অবস্থিত ভবদহ স্লুইসগেট ও আমডাঙ্গা খাল দিয়ে পানি অপসারিত না হওয়ায় বাড়িতে উঠছে পানি,ভেসে গেছে মাছের ঘের, তলিয়ে গেছে সবজী ও ফসলি ক্ষেত, স্কুল-কলেজের মাঠসহ উপাসনালয়।
দীর্ঘদিন যাবত ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে নেওয়া অকার্যকর পদক্ষেপে আবারও জলাবদ্ধতার শিকার ভবদহ অঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার। পানিবন্দি হয়ে অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করলেও মেলেনি এখনও কোনো সরকারি সহায়তা। কম দামে বিক্রি হচ্ছে গবাদিপশু। ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে অর্ধশত হেক্টর জমির সবজী ও ফসলি ক্ষেত।

যশোর জেলার অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলাসহ খুলনা জেলার ফুলতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলার পানি নিষ্কাশনের জন্য ১৯৬৮ সালে অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের কালিশাকুল গ্রামের ভবদহ নামক স্থানে নির্মিত হয়েছিল ২১, ৯, ৬ ও ২ ভেন্টের স্লুইস গেট। পরবর্তীতে টেকা, পশুর ও শ্রীহরি নদীর নব্যতা কমে যাওয়ায় ১৯৮৫ সাল থেকে স্থায়ী জলাবদ্ধতা শুরু হয় এ অঞ্চলে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন সরকার উদ্যোগ নিলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। যে কারণে টানা বৃষ্টিপাত হলেই ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে যশোর সদর, অভয়নগর,মনিরামপুর,কেশবপুর, উপজেলার অর্ধ শতাধিক গ্রামের মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে অর্ধশত হেক্টর জমির সবজী ও ফসলি ক্ষেত। বসতবাড়ির উঠানে কোমর পর্যন্ত পানি জমে রয়েছে। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। গবাদিপশু ও মানুষ এক সঙ্গে বসবাস করছে। উপজেলা কোটা, চলিশিয়া, বাগদাহ, আন্ধা, বলারাবাদ, বেদভীটা, সরখোলা, ডুমুরতলা, সুন্দলী, সুজতপুর, ডহর মশিয়াহটী, বাড়েধা, দীঘলিয়া, ভাটাডাঙ্গী, বারান্দি,মহিষদিয়াসহ অর্ধ শতাধিক গ্রামের হাজার হাজার পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। দীর্ঘদিন পানিতে চলাচলের ফলে ঠান্ডাজনিত অসুখবিসুখসহ চর্ম রোগে ভুগছে।

সম্প্রতি অতি বর্ষণ ও নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সুন্দলী ইউনিয়নের বিল সংলগ্ন গ্রামগুলো জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। কয়েক’শ মাছের ঘের ভেসে গেছে। প্রায় ১২৫ হেক্টর জমির সবজি ও ফসলী ক্ষেত তলিয়ে গেছে। দূর্যোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা বা ক্ষতির পরিমান নিরুপন করতে দেখা যায়নি। দ্রুত ত্রাণ সহায়তাসহ চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button