বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বজলুর রশীদ ফিরোজ। ১৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন রাজেকুজ্জামান রতন। শুক্রবার দুপুর ৩টায় রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে দলটির প্রথম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কংগ্রেসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ও নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন নিখিল দাস, আব্দুল কুদ্দুস ও জনার্দন দত্ত নান্টু। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন, রওশন আরা রুশো, আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পল্টু, অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ, নব কুমার কর্মকার, শফিউর রহমান, জুলফিকার আলী, প্রকৌশলী শম্পা বসু ও ডাক্তার মনীষা চক্রবর্তী।
সমাবেশে শ্রীলঙ্কার জনতা বিমুক্তি পেরামুনার সাধারণ সম্পাদক তিলভিন সিলভা বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধ চক্রান্তের বিষময় ফল ভোগ করছে শ্রীলঙ্কার জনগণ। জনগণকে বিভক্ত রাখা ও লুটপাট অব্যাহত রাখার দুই কৌশলই শাসকগোষ্ঠী অব্যাহত রেখেছে। আমরা পুঁজিবাদী শোষণ আর সাম্রাজ্যবাদী লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে লড়াই করে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ শাসকগোষ্ঠীর চেহারা দেখেছে। এখন প্রয়োজন বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম।’
এ সময়, তিনি বুলিসর্বস্ব মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিবর্তে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নাই। আন্দোলনের পথেই অধিকার আদায় এবং সরকারের পতনকে অনিবার্য করে তুলতে হবে।’
বাসদের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ভূলুণ্ঠিত পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে বামপন্থীদের। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে পুঁজিবাদ উচ্ছেদ ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই।’
নতুন সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘আজ যখন আমাদের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে তখন বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেণি তথা গ্রাম-শহরের শ্রমজীবী মানুষ পুঁজিবাদী শোষণ ও ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে জর্জরিত।’
বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ। সবকিছুকে কথার কথায় পরিণত করে গণতন্ত্র কতৃত্ববাদে রূপ নিয়েছে। দেশের জনগণ গণতন্ত্রের মুখোশ দেখেছে কিন্তু জনগণের ক্ষমতায়নের গণতন্ত্রের চেহারা দেখেনি। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা চলে গেছে। ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি করতে গিয়ে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বুর্জোয়া দলগুলো অসুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ও অনিরসনীয় সংকটের জন্ম দিয়ে চলেছে। তার খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে।’